1লা জুলাই 2022,কলকাতা:
মাননীয় কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শ্রী ভূপেন্দর যাদব 1লা জুলাই 2022-এ বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (BSI) হাওড়া স্থিত AJC বোস ইন্ডিয়ান বোটানিক গার্ডেন পরিদর্শন করেন, তিনি নিউ আলিপুরে জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ZSI)র 107 তম প্রতিষ্ঠা দিবসে যোগ দিতে কলকাতায় তাঁর প্রথম সরকারী সফরে এসেছিলেন এবং অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে প্লান্ট ডিসকভারি ও অ্যানিমাল ডিসকভারি 2021 প্রকাশ করে তিনি বলেন যে উভয় প্রতিষ্ঠানই ভারতের জীববৈচিত্র্যের ভিত্তিরেখা প্রস্তুতিতে বৈজ্ঞানিক তথ্য সরবরাহ করতে ভূমিকা পালন করছে। এমওইএফসিসি-র কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী কুমার চৌবে, অণুজীব শ্রেণীবিন্যাস বিষয়ে অসামান্য অবদানের জন্য জেএনটিইউ- এইচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর সিএইচ শশিকলাকে এবং উদ্ভিদ শ্রেণীবিন্যাস সংক্রান্ত গবেষনায় অসামান্য অবদানের জন্য কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মামিয়িল সাবুকে 2018 সালের ই.কে. জানকী আম্মল জাতীয় পুরস্কার প্রদান করেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ZSI’র প্রাক্তন অধিকর্তা ডঃ কৈলাশ চন্দ্র কে, প্রাণী শ্রেণীবিন্যাসএর ওপর তার অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়।
মাননীয় মন্ত্রী MoEFCC শ্রী ভূপেন্দর যাদব বোটানিক গার্ডেনে রুদ্রাক্ষ গাছ নামে পরিচিত Elaeocarpus angustifolius-এর চারা রোপণের পর নবনির্মিত “জলজ উদ্ভিদ বিভাগের” উদ্বোধন করেন। তিনি হাওড়ার বোটানিক গার্ডেন-এ অবস্থিত ‘দ্য গ্রেট বানিয়ান ট্রি’ (বটবৃক্ষ) পরিদর্শন কালে বলেন, সরকার জনপ্রিয় পদ্ধতিতে মনোযোগ না দিয়ে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দিকে একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করছে। তিনি দাবি করেছিলেন যে কেন্দ্রীয় সরকার একটি “পরিবেশ-বান্ধব জীবনধারার প্রচার করতে চায় যা ভারতকে তার জলবায়ু নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে সাহায্য করবে৷ আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের বিবেকহীন ব্যবহার এড়ানো উচিত, জলবায়ু পরিবর্তন কোনো দূরের বাস্তবতা নয়।
এর আগে তিনি বিএসআই এবং জেডএসআই বিজ্ঞানীদের সাথেও বিস্তারিত মতবিনিময় করেন এবং বলেন যে উভয় প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা জাতি গঠনে অপরিসীম অবদান রাখছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজির নেতৃত্বে, ভারত তাদের সকল প্রচেষ্টায় পূর্ণ সহযোগিতা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সেন্ট্রাল ন্যাশনাল হার্বেরিয়াম, হাওড়া পরিদর্শন করে শ্রী ভূপেন্দ্র যাদব সরকারের ডিজিটাল ইন্ডিয়া উদ্যোগের অধীনে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ স্মরণে তৈরি ভারতীয় ভার্চুয়াল হার্বেরিয়াম (IVH) এর নতুন ওয়েব পোর্টালেরও উদ্বোধন করেন। ডাঃ এ. এ. মাও, অধিকর্তা, বিএসআই জানান যে এই ওয়েব পোর্টালে হার্বেরিয়াম নমুনার এক লাখেরও বেশি ডিজিটালাইজড ছবি রয়েছে এবং এর মধ্যে টাইপ হার্বেরিয়ামএর প্রায় 52% নমুনা বিদেশী যা ব্রিটিশ আমলে বিশ্বের 83টি দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন যে, এই অনলাইন ডাটাবেস শুধু ট্যাক্সোনমিস্টদের জন্যই নয়, প্রকৃতিবিদ, বাস্তুবিদ, আণবিক জীববিজ্ঞানী এবং অপেশাদার গবেষকদের জন্যও উপকারী হবে। বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার IVH, ডিজিটাইজড নমুনা সংখ্যার দিক থেকে এই মুহূর্তে দেশের এক নম্বরে রয়েছে।
কলকাতা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ডাঃ এস এস ড্যাশ, বিজ্ঞানী ই এবং টেকনিক্যাল বিভাগের প্রধান, বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। তিনি জানান যে গত এক বছরে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও বোটানিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ভারতের উদ্ভিদজগতে 315 টি টাক্সা নথিভুক্ত করেছেন। বর্তমানে, ভারতে 55000 টিরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্ম, জিমনোস্পার্ম, টেরিডোফাইটস, ব্রায়োফাইটস, লাইকেন, ছত্রাক, শৈবাল ইত্যাদি) ইতিমধ্যেই চিহ্নিত এবং নথিভুক্ত করা হয়েছে তবে এখনও অনেকগুলি সনাক্ত করা এবং বর্ণনা করা বাকি রয়েছে।
বিএসআই-এর প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী ডঃ ডি কে আগ্রাওয়ালা যোগ করেন যে, ‘প্ল্যান্ট ডিসকভারি’র বর্তমান সংস্করণে 135টি অ্যাঞ্জিওস্পার্ম, 4টি টেরিডোফাইট, 9টি ব্রায়োফাইট, 28টি লাইকেন, 98টি ছত্রাক, 29টি শৈবাল এবং 12টি জীবাণু নথিভুক্ত করা হয়েছে। হটস্পট অঞ্চলগুলি যেমন পশ্চিমঘাট পর্বতমালা এবং উত্তর পূর্ব অঞ্চলগুলি মোট আবিষ্কারের 28% অবদান রেখেছে। রাজ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষণে, কেরালা থেকে সর্বাধিক আবিষ্কার করা হয়েছিল 51টি ট্যাক্সা, তারপরে মহারাষ্ট্র এবং অরুণাচল প্রদেশ। এই বছরের আবিষ্কারের মধ্যে অনেক সম্ভাব্য উদ্যানপালন, কৃষি, ঔষধি এবং শোভাময় উদ্ভিদ যেমন বেগোনিয়া, ইমপেটিয়েন্স (বালসাম), লেগুম, জিঞ্জিবার, অর্কিড ইত্যাদির বন্য আত্মীয় রয়েছে।
মাননীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দ্বারা প্রকাশিত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা হল ‘ফ্লোরা অফ ইন্ডিয়া’ সিরিজের নবম খণ্ড যা 567 প্রজাতির বিশদ বিবরণ সম্বলিত গ্রন্থ, যা স্যাক্সিফ্রাগেসি থেকে লেসিথিডেসি পর্যন্ত 19টি পরিবারএর বণ্টন নিয়ে রচিত। এছাড়াও “দ্য ওয়াইল্ড অর্কিডস অফ গোয়া” বইটি যা গোয়া রাজ্যের জন্য অর্কিডের প্রথম বিষদ নথিভুক্তকরণ এবং এতে 28টি শুধুমাত্র ভারতে প্রাপ্ত (এন্ডেমিক) প্রজাতি রয়েছে; এছাড়াও ‘অ্যালগাল ফ্লোরা অফ ঝাড়খণ্ড’, যাতে 67টি টাক্সার নথিভুক্তকরণ হয়েছে, যার মধ্যে 744টি শৈবাল প্রজাতির বিষদ ফ্লোরিস্টিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে যা 166 বর্গ(জেনেরা) এবং 64টি পরিবার(ফ্যামিলি)ভুক্ত।
MoEFCC-এর মাননীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রথমবারের সফরের সময় সমস্ত বিজ্ঞানী, কর্মী এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।