যিস্ দেশ মে গঙ্গা বহতি হ্যায়………..
ডাঃ রঘুপতি সারেঙ্গী।
যিস্ দেশ মে গঙ্গা বহতি হ্যায়………..
ডাঃ রঘুপতি সারেঙ্গী।
ফা-হিয়েন ভারতবাসীদের অনেকের কাছেই এক পরিচিত নাম। ইনিই প্রথম বৌদ্ধ পরিব্রাজক যিনি ৬০ বছর বয়সের ভার কে উপেক্ষা করে উত্তর-পশ্চিম এর বরফ পিচ্ছিল পাহাড়ি পথে পায়ে হেটে পাড়ি দিয়ে, সুদূর চীন থেকে ভারতবর্ষে এসেছিলেন। দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে পৌছে (৩৯৯-৪১৪ খৃঃ) কমবেশি টানা ১০ টি বছর কাটিয়েছেন পাটলিপুত্র ( বর্তমান, পাটনা) নগরে। টানা তিন বছর করেছেন সংস্কৃত শিক্ষা। পরিব্রাজক হিসাবে ঘুরেছেন লুম্বিনী, তক্ষশীলা, কনৌজ, মথুরা, মধ্যদেশ সহ বিভিন্ন বৌদ্ধপীঠে। এরপরে বেশ কিছু সংস্কৃত মূল্যবান পান্ডুলিপি হাতে কয়েক বছর শ্রীলঙ্কা তে কাটিয়ে এক বানিজ্যিক জাহাজে চেপে বারবার পথভ্রষ্ট হয়েও শেষ পর্যন্ত চীনের প্রাচীর সংলগ্ন ‘মাউন্ট লাও’ তে পৌছাতে পেরেছিলেন । আর, ওখানেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বসবাস করেন। ব্রতের সমাপ্তিতে, নিজের ভাষাতে এই দীর্ঘ্য ভ্রমন কাহিনী এবং বৌদ্ধ ধর্মের তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ লিখে দিয়ে যান যা আজও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের উচ্চ-শিক্ষিত সমাজে সমান আদরণীয়।
সে তো সব ঠিকই আছে। এতে আমার মতো রামা কৈবর্ত এর কী বা যায় আসে! আসলে, ধারাবাহিক এই ঘটমান বর্তমান ই এই প্রতিবেদন লিখার তাগিদ।
চীনা ভাষাতে লেখা ফা-হিয়েন এর এই ভ্রমণ কাহিনীর ইংরেজী অনুবাদক,James Legge (1886) লিখছেন,ওই সময়ে তাঁর দেখা এই দীর্ঘ গাঙ্গেয় উপত্যকাতে হিংসা ছিল না। মানুষের মধ্যে সদ্ভাব ছিল প্রশ্নাতীত। মানুষ মদ্যপান করতো না। স্বাস্থ্য পরিসেবা ছিল পুরোপুরি নিঃশুল্ক। জীবন ছিল নিরুপদ্রব। যে কারনে
” People were set free and there was very less interference of the king in the lives of people.” এ টুকুই লিখে থামেন নি ফা-হিয়েন। চোখে দেখা বাস্তব সত্যকে তিনি তুলে ধরেছেন ঠিক এই ভাবেঃ
পাটলীপুত্র নগরীর পার্শ্ববর্তী এক গ্রাম এর দুই গ্রামবাসীর কাজিয়া।
কিছু অর্থের বিনিময়ে এক চাষী অন্য চাষীকে এক খন্ড জমি বিক্রি করে। ক্রেতা, কিছু দিন পরে, সদ্য কেনা জমিতে লাঙ্গল করতে গেলে ফাল এর আঁচড়ে মাটি থেকে একটি স্বর্ণ-মূদ্রা ভর্তি ধাতব কলস উঠে আসে।
ক্রেতা লাঙল-গরু জমিনে ফেলে কলস হাতে সোজা ছূটে যায় বিক্রেতার কাছে। বলতে থাকে,
” এ আপনার সম্পত্তি। আপনার জমি খুঁড়তে গিয়ে পেয়েছি। আমি আপনার মাটি কিনেছি, কলস কিনি নি। তাই এই যে রইলো, আমি চললাম । অন্যের জিনিস ভোগ করে সংসারের অমঙ্গল হতে আমি দেবো না।”
বিক্রেতা বলে,” শোনো শোনো, জমি কিনেছ মানে জমির ওপরে, ভিতরে যা আছে, সব ই তো তোমার। এখন আমি এর মালিক নই। বিক্রিত জমির উপরে আমার মালিকানা বর্তায় না। আমি নিলে অধর্ম হবে।
তাই, জেনেশুনে এমন অধর্ম করা যায় ?”
যুক্তি পাল্টা-যুক্তি চলতে থাকলে পথচলতি এক বয়ষ্কের পরামর্শে তারা জমিদার এর দরবারে যায়। উভয়েই উভয়ের যুক্তি সবিনয়ে জানিয়ে করজোড়ে অনুরোধ করে,” হুজুর! এটা আপনি দয়াকরে জমা নেন, কোষাগার থেকে দুস্থদের দান করে দেবেন।”
সব শুনে জমিদার মশাই বললেন, ” উৎকোচের অর্থে প্রজার কল্যান করতে চাইলে আসলে অকল্যান ই হবে, আর এজন্য দায়ী হবো আমি। তাই, এ হোতে পারে না।
ভারতীয় পরম্পরার এই ঘটনাপ্রবাহ দীর্ঘ্যতর।
কিন্তূ,আজকের এই দেশ সেও তো সেই ভারতবর্ষ ই!
” রঘু-কূল ঋত সদা চলি আঈ।
প্রাণ যাঈ পর বচন ন যাঈ।।”….. এই ছিল একদিন যে দেশের আদর্শ……. ” যিস্ দেশ মে গঙ্গা বহতি হ্যায় য়ে দেশ মে ক্যায়া হোতি হ্যায় ?”
স্বাভাবিক এ প্রশ্ন টা তো উঠবেই উঠবে আজ নয় কাল। পারবো তো আমরা সেদিন বিবেকের ডাকে সাড়া দিতে, প্রশ্ন কিছু একটা রয়েই যায়………….
Dr. Raghupati Sharangi, a renowned homeopath and humanitarian who lives for the people’s cause. He is also a member of the Editor panel of IBG NEWS. His multi-sector study and knowledge have shown lights on many fronts.