ব্যাঙ্ক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ আইনে সংশোধন আনার প্রস্তাব ২০২৩-২৪-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আইন এবং ব্যাঙ্কিং কোম্পানিজ আইনেও প্রয়োজনীয় সংশোধন প্রচেষ্টার প্রয়োজন বলে উল্লেখ এবারের বাজেট প্রস্তাবে
বিশেষ জোর দেওয়া হবে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলার লক্ষ্যে
ডিজিটাল পরিকাঠামোর উৎসাহদান প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরেও
স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবকালের লক্ষ্যকে সামনে রেখে মহিলা সম্মান সঞ্চয়পত্র চালুর প্রস্তাব আগামী অর্থ বছর থেকে
By PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
আর্থিক ক্ষেত্রের নিরন্তর সংস্কার প্রচেষ্টা এবং প্রযুক্তির উদ্ভাবনী প্রয়োগ ও ব্যবহারের ফলশ্রুতিতে ভারতীয় অর্থনীতির বাজার এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। দেশের আর্থিক ক্ষেত্রকে আরও সংহত করে তুলতে ২০২৩-২৪-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব রেখেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আজ সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট পেশকালে তিনি বলেন, অমৃতকালে পৌঁছনোর লক্ষ্যে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে রয়েছে প্রযুক্তি-চালিত তথা জ্ঞান-ভিত্তিক এক অর্থনীতি যা গড়ে উঠবে সরকারি ব্যাপক লগ্নি প্রচেষ্টার হাত ধরে এবং মজবুত এক আর্থিক কাঠামোর মধ্যে।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ব্যাঙ্কের পরিচালন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তুলতে এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ আইনে কয়েকটি সংশোধন প্রস্তাব আনা হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাঙ্কিং কোম্পানিজ আইন এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া আইন সংশোধনেরও প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আজ সংসদে আরও জানিয়েছেন, কোম্পানি আইনের আওতায় বিভিন্ন কোম্পানি বা সংস্থার প্রয়োজন মেটাতে একটি কেন্দ্রীয় প্রসেসিং সেন্টার গড়ে তোলার প্রস্তাব রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে। এর ফলে, সার্বিক ব্যবস্থায় দ্রুততার সঙ্গে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালানো হবে।
একটি সুসংহত আইটি পোর্টাল গড়ে তোলারও প্রস্তাব রেখেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর মতে, এটি বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা তাঁদের অনাদায়ী শেয়ার ও ডিভিডেন্ড আদায় করার জন্য সহজেই ইনভেস্টর এডুকেশন অ্যান্ড প্রোটেকশন ফান্ড অথরিটির দ্বারস্থ হতে পারবেন।
ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন যে অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিজিটাল লেনদেনের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। সমাজের সর্বস্তরে এর জনপ্রিয়তাও ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের এ সম্পর্কিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৬ শতাংশ। আর্থিক মূল্যের হিসাবে এই হার দাঁড়িয়েছে ৯১ শতাংশের মতো। সরকারি ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ২০২৩-২৪ অর্থ বছরেও আর্থিক সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে তিনি ঘোষণা করেন।
এবারের বাজেট প্রস্তাবের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে মহিলা সম্মান সঞ্চয়পত্র চালু করার বিষয়টিও উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, নারী ক্ষমতায়নের ওপর এবারের বাজেটে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে বলা হয়েছে যে স্বাধীনতার এই অমৃত মহোৎসবকালে নারী ক্ষমতায়নের মতো বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। তাই, মহিলা সম্মান সঞ্চয়পত্র চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২৫-এর মার্চ পর্যন্ত এই সঞ্চয় প্রকল্পটি চালু থাকবে। এর আওতায় দু’বছর মেয়াদকালের জন্য ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ৭.৫ শতাংশ হারে সুদ সহ আমানতের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে মহিলা ও কন্যাসন্তানের নামে। প্রয়োজনে আমানতের কিছু অংশ তুলে নেওয়ারও সুযোগ থাকবে এই সঞ্চয় প্রকল্পটিতে।
এবারের বাজেট প্রস্তাবে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষমতায়নের দিকটিও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়েছে বলে ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমের আওতায় আমানতের সর্বোচ্চ মাত্রা ১৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। অন্যদিকে, মান্থলি ইনকাম অ্যাকাউন্ট স্কিমে সাড়ে চার লক্ষ টাকার পরিবর্তে এখন থেকে সিঙ্গল অ্যাকাউন্টে ৯ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানত হিসেবে বিনিয়োগ করা যাবে। আবার জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে আমানতের সর্বোচ্চ মাত্রাকে ৯ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
ডিজিটাল পদ্ধতিকে অক্ষুণ্ন ও অব্যাহত রাখতে প্রয়োজনীয় সমাধান ও সুযোগ-সুবিধার জন্য বিভিন্ন দেশের অনুকূলে GIFT IFSC-তে ডেটা এমব্যাসি তৈরিরও প্রস্তাব রাখা হয়েছে এবারের বাজেটে।
সিকিউরিটি মার্কেটে পেশাদার তথা কর্মীগোষ্ঠীর দক্ষতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে সেবির ক্ষমতা বৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে এবারের বাজেট প্রস্তাবে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সিকিউরিটিজ মার্কেট-এর রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সেবির উপযুক্ত ক্ষমতায়নের চেষ্টা করা হবে।