অযোধ্যার রঘুপতি রাম

0
686
রনজিতপুর (মেদিনীপুর) এর ষড়ংগী পরিবার এর সহস্র বছরের নিত্য-সেবিত বিগ্রহ।
রনজিতপুর (মেদিনীপুর) এর ষড়ংগী পরিবার এর সহস্র বছরের নিত্য-সেবিত বিগ্রহ।
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:7 Minute, 13 Second

অযোধ্যার রঘুপতি রাম
ড: রঘুপতি ষড়ংগী

30 March 20223,কোচবিহার:

কথিত আছে, ” তপস্যাধ্যায় নিরতম্ বাল্মীকি।” গ্রহ থেকে গ্রহে বিচরণরত নারদ মুনি এসে প্রশ্ন করলেন, মুনিবর! ” কোনু অস্মিন্ সামব্রতং লোকে গুণবান কশ্চ বীর্যবান ধর্মজ্ঞশ্চ কৃতজ্ঞশ্চ সত্যবাক্যৌ দৃঢ়ব্রতঃ চরিত্রেণ চাকোযুক্ত, সর্বভূতেষু কো হিতঃ, বিদ্বান কশ্চ সমর্থ, কশ্চৈক প্রিয়দর্শনঃ আত্মবান জিতক্রোধঃ দ্যুতিমানঃ অসূয়কঃ,কশ্চ বিভ্যতি দেবাশ্চ যাত রোশস্য সংযুগে ?”
নারদ কহিলা ধীরে,” অযোধ্যার রঘুপতি রাম।”
মহাকবি কালিদাস তাঁর ‘রঘুবংশ’ এ রামচন্দ্র কে দেখেছেন,”জ্ঞানে মৌনম্ ক্ষমাশক্তৌ ত্যাগে শ্লাঘা বিপর্যয়ঃ”। মানুষের বিশ্বাস, বর্তমান উত্তরাখণ্ড এর চিত্রকূট এ যে দুটি গুহা আছে তার একটি তে রাম-সীতা নিশি যাপন করতেন। তাই এর নাম, ‘সীতা ব্যাঙরা’। আবার, ছত্রিশগড় এর একটি উচ্চস্থান এর নাম ‘রামগড়’ যেখানে, “কশ্চিৎ কান্তা বিরহ গুরুণা স্বাধিকার… জনক তনয়া স্নান পুণ্যোদকেষু “…. মা সীতা স্নান করতেন।

পুরাণ এর ‘রাম’ এর পরমায়ূ ছিল দশ হাজার বছর। দৈর্ঘ্যে সে রাম নাকি গুনে গুনে তাঁর হাতের ঠিক চোদ্দ হাত ছিলেন।
” দশবর্ষ সহস্রাণী দশ বর্ষ শতানী চ। রামরাজ্যমুপাসিত্বা ব্রহ্মলোকং চ পশ্যতি।”। পুরাণ পুরাণের মতো করে চলুক। সে নিয়ে আমাদের বক্তব্য নেই। আমরা দেখতেও যাই নি। ( কিন্তু, পৌরাণিক কাহিনী তে ঠিক-ঠিক প্রবেশ করতে চাইলে, শ্রী গিরীন্দ্র শেখর বসু’র ‘পুরাণ প্রবেশ’ বই খানি পড়তে আবেদন রইলো।)

সে যাক। রামচন্দ্র কাল্পনিক কোনো গাথা’র চরিত্র হতে পারেন। রাম কোনো মহাকাব্যে’র নায়ক হতে পারেন। শ্রী রামচন্দ্র কোনো ঐতিহাসিক পুরুষ ও হতে পারেন, নাও হতে পারেন। আবার,রামকৃষ্ণ মিশন এর সাধুদের চোখে তিনি “শুদ্ধ ব্রহ্ম পরাৎপর রাম ” ও হতে পারেন।

এই যুক্তি-তর্কের কূট-কাচালি তে যাওয়া আমাদের ইচ্ছা ও উদ্দেশ্য কোনোটাই নয় ; কারুর মতাদর্শে সামান্যতম আঘাত করা ও নয়।

RAM NAVAMI
RAM NAVAMI

উদ্দেশ্য আমাদের একটাই … বিমূর্ত শ্রী রামচন্দ্রের মূর্ত আদর্শ টি কে প্রত্যেক ভারতবাসীর হৃদয়ে স্থান করে দেওয়া। নারদ এর প্রশ্নের উত্তরে মহামুনি বাল্মীকি যে রাম কে তুলে ধরেছেন, কে কোথায় এমন আছেন যিনি সেই রাম কে তাঁর বড়ো-ছেলে, স্বামী বা দেশের রাজপাটে দেখতে চান না ? আমি সেই রামের কথা বলছি, যিনি অভিষেক ঘোষণার ঠিক পরের রাতে Palace-intrics কে হেলায় উপেক্ষা করে …..
” কৌশল্যা যব বোল না যাঈ।
ঠুমক ঠুমক প্রভু চলত পরাই।”
পিতার প্রতিশ্রুতির প্রতি পূর্ণ মর্যাদা দেখিয়ে, অযোধ্যার মোহ ত্যাগ করে, গুটি-গুটি পায়ে দন্ডকারণ্যের সাপদসঙ্কুল হিংস্র পশুদের মাঝে টানা বারো টা বছর কাটিয়ে এলেন! আমি সেই রামচন্দ্রের কথা বলছি, যিনি সব বুঝেও মাতা কৈকেয়ীর প্রতি সামান্য বিষোদ্গার টুকুও করেন নি। অনিবার্য ভবিষ্যত কে হাসি মুখে বরণ করে নিয়েছেন। এই কী তবে তাঁর মৃচ্ছকটি নাটক এর সেই অমোঘ স্থিতি, ” ঘনান্ধকারেষু ইব দীপ দর্শণম্ ?”
পিতা দশরথ যেখানে জ্যেষ্ঠ-পুত্রের অনুকূলে ছিলেন, সুযোগ-সন্ধানী ছোটো রাণীর প্রতি ছিলেন একান্ত নির্দয় , সমস্ত রাজ্যবাসী যখন রামচন্দ্রকেই অযোধ্যার সিংহাসনে দেখতে চেয়ে ছিলেন তখনও যে রাম “সাম-দান-দণ্ড-ভেদ” এর সুযোগ নেন নি, আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি সেই রাম এর কথাই বলছি যিনি ” দুঃখেষু অনুদ্বিঘ্নমনাঃ সুখেষু বিগতস্পৃহঃ “।
স্থিতধী, যে রামচন্দ্র বিদায় বেলায় ও জন্মদাতা মা কৌশল্যা কে বুঝিয়ে বলেছেন, তাঁর অবর্তমানে ভরতের সামনে তাঁর প্রশংসা না করতে। ঠিকই ধরেছেন, আমি সেই দূরদর্শী রামচন্দ্রকেই আপনাদের সামনে আনতে চেয়েছি।
হাতি-ঘোড়া সহ এক আস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে তীব্র বেগে ধুলো ওড়াতে ওড়াতে এই অরণ্য পথে আসতে দেখে, বৈমাত্রেয় ভাই ভরত এর নিষ্কন্টক সিংহাসন গড়ার আতঙ্ক লক্ষণ এর মনে এলেও রামচন্দ্র তাকে আমল দেন নি, বিশ্বাস ও করেন নি। ঘুরে, লক্ষণ কেই বরং তিরস্কার শুনতে হয়েছে দাদা, রামের মুখে। ভ্রাতৃ-প্রেম এর মূর্ত- প্রতিক সেই রামকে ই আমি ঘরে ঘরে চাইছি।
সীতা অপহরণের পরে, একপত্নী ব্রতী ব্যাকুল যে রাম চিত্রকূট এর পাহাড়, বৃক্ষ-লতা-গুল্ম কে জড়িয়ে ধরে জানতে চাইছেন তাঁর সীতার ঠিকানা, শত অনুরোধ সত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ না করে অশ্বমেধ যজ্ঞে স্বর্ণ-সীতা কে পাশে বসিয়ে কর্ম সম্পাদন করেছেন আবার, অযোধ্যার মঙ্গলের জন্য প্রাণাধিক আপন সেই সীতা কে ও ত্যাগ করেছেন, আমি সেই রাজা রাম কে নিয়ে “রাম-নবমী” পালন করতে বসেছি।
ভারতীয় সনাতন সংস্কৃতির পক্ষে ‘পদ্ম-পুরাণ’ তার নিজস্ব ভাষা তে পুরুষোত্তম শ্রী রামচন্দ্রের যথোচিত মূল্যায়ন করেছে ঠিক এই ভাবে।
” ন তৎ পুরাণং ন হি যত্র রামো।
যস্যাং ন রামো ন চ সংহিতা সা।
সা নেতিহাসো ন হি যত্র রামঃ।
কাব্যং ন তৎ সান্নহি যত্র রামঃ। “

About Post Author

Antara Tripathy

Chief Editor & CEO of IBG NEWS (09/Aug/2018-Present), Secretary of All Indian Reporter's Association,West Bengal State Committee. Earlier Vice President of IBG NEWS (01/Jan/ 2013-08/Aug/2018). She took over the charge from the Founder Editor of the Channel.
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here