শত কথার শত দোষ, বুঝে শুনে কথা কোস
সুনন্দ মিত্র, সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সমাজকর্মী
হ্যাঁ, সত্যিই কথাটা খুবই প্রাসঙ্গিক। সত্য কোনো না কোনো ভাবে বেরিয়ে আসবেই, শত চেষ্টাতেও তাকে আটকে রাখা যায় না।
সত্যিই’তো, প্রশাসন যখন আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অনুসারে কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় মিছিলের “route” ঠিক করে দিয়েছে তখন প্রশাসন নিশ্চয় আগাম খবর পেয়েছিল সেইসব “স্পর্শকাতর” এলাকায় অবশ্যই গন্ডগোলের সম্ভাবনা আছে। তাই নয় কি?
এক বিশেষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ দাঙ্গা লাগাতে পারে, অর্থাৎ প্রশাসন বকলমে স্বীকার করে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু বসবাসকারী বিশেষ এক সম্প্রদায়ের মানুষ দাঙ্গা প্রবন। নাহলে সেইসব বিশেষ বিশেষ সংখ্যালঘু এলাকাকে সম্ভাবনাময় “স্পর্শকাতর” এলাকা ঘোষণা করতো না। অর্থাৎ প্রশাসনও তাদের ভয় পায়। শুধু তাই নয়, সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ দাঙ্গা লাগাতে পারে জেনেও, সেই সম্প্রদায়ের মানুষদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য তাদের অপরাধ প্রবণতাকে লঘু করে দেখানোর জন্য যারা আক্রান্ত তাদেরই কাঠগড়ায় তোলা, এটাওতো সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত দেওয়া, তাই নয় কি? তাহলে কি ধরে নিতে হবে ধর্মের মোড়কে দাঙ্গা লাগানো আইনসঙ্গত ভাবে ন্যায্য???
যাইহোক প্রশাসন তার অক্ষমতা স্বীকার করে নিয়েছে ওই “route” পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। সেটা নাহয় তাও মানা যায় কিন্তু সেই দোষ কি আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর ওপর চাপানো কোনভাবে ন্যায়সঙ্গত?
কখনও শিবলিঙ্গ, তো কখনো সংখ্যাগুরুর মাতৃ লাঞ্ছনা, তো কখনও কোটি কোটি হিন্দু জনগোষ্ঠীর মৃত্যু কামনা, তো কখনো ধর্মীয় মিছিলে আঘাত, এগুলো কি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত নয়? নাকি সংখ্যাগুরুদের কোন ধর্মীয় ভাবাবেগ থাকতে পারে না?
দ্বিতীয়ত রমজান মাসে নাকি সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ কোন অপরাধ করে না, এর থেকে হ্যাসস্কর ব্যাখ্যা আর কি হতে পারে? তার মানে তো এটাও হতে পারে, বাকি এগারো মাস তারা অপরাধ করে, বা এমনও হতে পারে এই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের অপরাধ করা ধর্মীয় সংস্কারে পড়ে, বা তাদের ধর্মীয় সংস্কারে এই অপরাধ করাটা আইন সঙ্গত?
দ্বিচারিতা আরও আছে যখন ভারতবর্ষকে নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক দেশ বলে চিৎকার করছে এরা তখন সেখানে সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরু তকমাটা আসছে কি করে? তাহলে কি সেই বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ ছাড়া বাকিরা নিরপেক্ষ ভারতবর্ষের নাগরিক? তাহলে তো তাদের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়। কারণ এক দেশ এক আইন। একই দেশে দুরকম নীতি চলতে পারে?
শেষ প্রশ্ন, প্রশাসন যখন বকলমে স্বীকারই করে নিয়েছে কিছু বিশেষ বিশেষ এলাকার এক বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষ অপরাধ প্রবন, তখন “route” পরিবর্তন না করে কেন তারা শক্ত হাতে অপরাধ দমন করেননি? তাহলে কি প্রশাসনও তাদের ভয় পায়? তাহলেতো সরকারের দক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়।
এ প্রসঙ্গে পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রীর কথা খুবই প্রাসঙ্গিক “দাঙ্গাবাজদের মাথা ভেঙে গুড়িয়ে দেবো”
সরকার হচ্ছে রাজ্যের অভিভাবক তার কি পক্ষপাতিত্ব করা সাজে?
মন্দের ভালো বারংবার হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আঘাতের ফলে ধীরে ধীরে হিন্দুরা একত্রিত হওয়া। যা কোন হিন্দু করে দেখাতে পারছে না সেই কাজটাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় করে দিয়েছে। গত বিধানসভা ভোটেই তার প্রমাণ পাওয়া গেছে দু কোটি আঠাশ লক্ষ সংখ্যাটা খুব কম নয় এভাবে চলতে থাকলে সংখ্যাটা বাড়বে বৈ কমবে না।
“নরক গুলজার, বাংলার ভগবান নিদ্রা গিয়েছেন গোলযোগ সইতে পারেন না?”
সব শেষে ধন্যবাদ প্রশাসন কে “সত্য”টা স্বীকার করে নেওয়ার জন্য।
* লেখকের নিজস্ব অভিজ্ঞাতা ও মত প্রকাশের অধিকারের ভিত্তিতে প্রকাশিত চ্যানেল এই মতের সাথে সহমত বা বিদ্ধেষ কোনটাই পোষণ করে না।*