জাতীয় ঔষধী লতা রূপে ভারতে পরিচিত হচ্ছে গুড়ূচী

0
1749
ভারত সরকার 'গুড়ূচী'-কে জাতীয় ঔষুধী লতা রূপে চিহ্নিত করতে চলেছে
ভারত সরকার 'গুড়ূচী'-কে জাতীয় ঔষুধী লতা রূপে চিহ্নিত করতে চলেছে
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:5 Minute, 14 Second

জাতীয় ঔষধী লতা রূপে ভারতে পরিচিত হচ্ছে গুড়ূচী

এম রাজশেখর (৬ নভেম্বর ‘১৯):- বিভিন্ন ঔষধী গুণের কারণে ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রকের অধীনে কর্মরত ‘ন্যাশনাল মেডিসিন্যাল প্ল্যান্ট বোর্ড’ ধীরে ধীরে সমগ্র দেশে ‘জাতীয় ঔষধী লতা’ রূপে পরিচিত করাচ্ছে ‘গুড়ূচী’-কে।

বেদ থেকে শুরু করে চরক-সুশ্রুত-এর জমানা হয়ে আধুনিক সময় পর্যন্ত গুড়ূচী বরাবরই সাফল্যের সঙ্গে তার ঔষুধী গুণের প্রমাণ দেখিয়েছে।

খুব সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক এই গুড়ূচী-র ইতিবৃত্তান্ত।
এই মুহুর্তে গুড়ূচী-র যে প্রজাতি নিয়ে কথা বলবো তার বিজ্ঞানসম্মত নাম Tinospora Malabarica (Lam) Miers. হিন্দীতে এই লতাকে গিলোয় বা গুরুচ বা গুড়ুচ বলা হয়।
বেদে এই লতাকে ‘অমৃতা’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। বৈদিক সুক্ত অনুযায়ী এর নাম ‘বৎসাদনী’, মহীধর-এর ভাষ্যে এই লতাকে ‘গুড়ূচী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চরক সূত্রস্থান-এর চতুর্থ অধ্যায়ে এই লতাকে ‘মধুপর্ণী’ রূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এছাড়াও একে উদ্ভিজ্য বৈশিষ্ট্যর কারণে ‘ছিন্নরুহা’ ও ‘ছিন্নোদ্ভবা’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।

এই লতার গায়ে ঘন বুটি থাকে (পদ্মবীজের চাকায় যেমন থাকে), পান পাতা সদৃশ পাতাগুলো রোমশ নয়। স্বাদ তিক্ত। হলদেটে সাদা রঙের ফুল হওয়ার পরে মটরের আকারের ফল হয়।

এটা ছাড়াও ‘গুড়ূচী’-আরো কয়েকটা প্রজাতি দেখা যায়, তাদের একটাকে পশ্চিমবঙ্গে বলা হয় ‘ঘোড়া গুলঞ্চ’, এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Tinospora Cordifolia Miers।
অন্যটাকে বাঙালীরা ‘পদ্ম গুলঞ্চ’ নামেই চেনে, এর বিজ্ঞানসম্মত নাম Tinospora Tomentosa Miers। মেনিসপারমাসিয়া পর্বের এই লতা তার নিজস্ব ঔষধী গুণের কারণে নিজেকে সত্যি এক অতুলনীয় জায়গায় তুলে এনেছে।

যে বা যাঁরা আয়ুর্বেদ বা ভারতীয় নিজস্ব চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি সন্দিহান তাঁরাও শুনলে স্তম্ভিত হবেন এই লতার পাতায়, কাণ্ডে, পর্বে ও মূলে যে রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে তাকে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান Giloin, Giloinin, Glycoxides of myristic & palmitic acid, Unidentified bitter principle, A natural substance ও Glycosides রূপে চিহ্নিত করেছে।

চরক সংহিতা অনুযায়ী গুড়ূচী ‘বিষম জ্বর’, পাণ্ডুরোগ বা কমলা বা ন্যাবা (জণ্ডিস), পিত্তজ বমন, বাতরক্ত ও স্তন শুদ্ধ্যার্থে উত্তম ফলদায়ক।

সুশ্রুত অনুযায়ী, অর্শরোগ, প্রবল পিত্তাধিক্যজনিত বাতরক্ত, বাতজ্বর-এ গুড়ূচী লাভদায়ক।

চক্রদত্ত সংগ্রহ মতে মেহরোগ, শ্লীপদ (ফাইলেরিয়া), আমবাত-এর জন্য গুড়ূচী সর্বোত্তম।

ষোড়শ শতাব্দীর অন্যতম প্রামাণ্য গ্রন্থ ভাবপ্রকাশ অনুযায়ী কুষ্ঠ রোগে গুড়ূচী-র পাতা ও জীর্ণ জ্বরে কাণ্ড সহ অন্যান্য অংশ উপকারী।

বর্তমান সময়ে লোকায়ত ব্যবহারে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক পুরাতন বা জীর্ণ জ্বর, অরুচি, বাতের যন্ত্রণা, পচা ঘা, হৃদকম্পন, রক্তার্শে, অগ্নিমান্দ্য, স্বরভঙ্গ, কাসি, বাতরক্ত, পাণ্ডুরোগ (জণ্ডিস), বাতজ্বর বা বাতিকের জ্বর, শূলপীড়া, বসন্ত রোগ, পেটের দোষ, আরুংষিকা, সোরিয়াসিস, পিত্তবমি, মেদস্বিতা, ক্রিমির আধিক্য, মস্তিষ্কের দুর্বলতা, স্নায়বিক দুর্বলতা, প্রমেহ রোগ সহ একাধিক রোগ নির্মূল করার উদ্দেশ্যে সাফল্যের সাথে ‘গুড়ূচী’ ব্যবহার করছেন।

রোগ প্রতিরোগ ও রোগমুক্তির ক্ষেত্রে ‘গুড়ূচী’-র এতো গুণ দেখেই হয়তো বেদে এই লতাকে বলা হয়েছে, ‘সর্গাৎ ওষধীঃ বিবর্ত্তস্বঃ ওঘাৎ’।
আধুনিক কালে চিকিৎসা বিজ্ঞান এই লতাকে অন্তঃসারপ্রধান ভেষজ রূপে চিহ্নিত করেছে।

আর এতো কিছু ঔষধী গুণের কারণে ভারত সরকার ‘গুড়ূচী’-কে জাতীয় ঔষুধী লতা রূপে চিহ্নিত করতে চলেছে।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here