শিশুর বাবা ও মাকে কিছু প্রশ্ন
ড:পলাশ বন্দোপাধ্যায় ,কলকাতা ,২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
★☆পিতা প্রনাম ☆★
পিতা স্বর্গ, পিতা ধর্ম, পিতাহি পরমং তপ। পিতোরি প্রিতিমা পন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতাঃ।। ১
★☆ মাতা প্রনাম ☆★
মাতা জননী ধরিত্রী, দয়াদ্র হৃদয়া সতী। দেবীভ্যো রমণী শ্রেষ্ঠা নির্দ্দোশা সর্ব দুঃখ হারা ।
শিশুর জন্ম দেওয়ার থেকেও কঠিন শিশুকে মূল্যবোধ এবং আদর্শে মনের মতো করে গড়ে তোলা। আপনার শিশু আপনার এটা মেনেও বলি, এই ব্যাপারগুলো নিয়ে ওয়াকিবহাল আছেন তো?…
◆খাদ্যগুনের দিক থেকে সব চাইতে ভালো খাবারটা সঠিক পরিমানে আপনার শিশুকেই দিচ্ছেন তো?
–আপনার বিকাশ ও বৃদ্ধি যা হবার তা তো হয়ে গেছে।ওদের হচ্ছে।এখন কিন্তু ওদের খাবারের দিকে বেশি নজর দেওয়া দরকার।আপনাদের খাবারের দিকের থেকেও।
◆আপনার গাড়ি আছে?অভিনন্দন আপনার প্রাচুর্য্যের জন্য।কিন্তু ছেলে স্কুল বাসে করেই স্কুল যাচ্ছে তো!
–আপনার প্রাচুর্য্যের স্বাদ আপনি পান।ও বুঝুক সব কিছু সহজে এবং অনায়াসে অর্জিত নয়, কষ্ট করে অর্জন করতে হয়।
◆আপনারা দুজনেই ওয়ার্কিং? বাচ্চা কাজের লোকের কাছে থাকে? আপনার আদরের বা সময় দেবার ঘাটতি পূরণ করতে রোজ খেলনা কিনে আনেন তার জন্য?চকলেট কিনে এনে সময় না দেওয়ার পাপ স্খলন করেন?করবেন না।একদম করবেন না। এতে নিজের অজান্তে বারোটা বাজাচ্ছেন আপনার বাচ্চার।
–বরং সেক্ষেত্রে একজন চাকরি ছাড়ুন।বাচ্চাকে এটা বোঝাতে হবে, যা করছেন তা ওর ও সংসারের ভালোর জন্য,স্বচ্ছলতার জন্য ।ছোটরাও, বোঝালে বোঝে।
◆আপনার একটাই বাচ্চা? খেলার সাথী নেই? তাকে রোজ মাঠে নিয়ে যাচ্ছেন তো! অন্য বাচ্চাদের সাথে মিশতে দিচ্ছেন তো?
–বাচ্চা কিন্তু নিজেদের বয়সীদের সঙ্গেই মিশতে পছন্দ করে।তাতেই তার সঠিক মানসিক বিকাশ হয়।জেনারেশন গ্যাপ তাদেরও আছে।এবং প্রবল ভাবে।তাদেরও প্রাইভেসি আছে।কিছু কথা সমবয়সীদের সঙ্গেই বলতে চায় তারাও।মনে রাখবেন।
◆বাচ্চার জন্য রোজ নতুন নতুন খাবারের ব্যবস্থা করছেন কি? যাতে সে বোর না হয়!
–করবেন না!অনুগ্রহ করুন। তিনশো পঁয়ষট্টি দিন তিনশো পঁয়ষট্টি রকম খাবার তো আপনার নেই।যা আছে তাই খাওয়ান।আপনি কি পায়ে হাঁটতে বোর লাগে বলে মাঝে মাঝে হাতে হাঁটেন?যদি না করেন,তাহলে এটারও দরকার নেই।
◆আপনি কি আপনার শিশুকে এমন সব জ্ঞান বা উপদেশ দেন যেগুলো আপনি নিজেই মানেন না বা পালন করেন না?
–সর্বনাশ! তাহলে আপনার কথা ও কাজের মধ্যে মিললো কোথায়? সব কিছু কি খেলা খেলা? শিশু একটু বড় হলেই পাল্টা প্রশ্ন করবে তো! তখন উত্তর কি দেবেন ঠিক করেছেন? নিজেকে পাল্টান।বিশ্বাসযোগ্য করুন শিশুর কাছে,যাতে সে আপনাকে শ্রদ্ধার আসনে বসাতে পারে।
আপনার শিশু,আপনার হাত ধরেই মানুষ হোক।
জনসংখ্যায় শুধু সংখ্যা নয়, সুস্থ্য সুন্দর মনের মানুষ যোগ দিতে পারলে, তবেই আর একটি প্রাণ এই পৃথিবীতে আনুন । না হলে ভুল কারণে আপনার সন্তান হেডলাইন হবে, তখন তা সম্মানের থেকে অসম্মান বেশি নিয়ে আসবে দেশ ও সমাজের জন্য। ~ সুমন মুন্সী
পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়
25.09.2020