ফুলের সাজে বিদায়
সুমন মুন্সী, কলকাতা
সেদিন দেখা হয়েছিল, নির্জন পাহাড়ী পথে,
একাকিনী সেথায় তুমি দাঁড়িয়ে ছিলে পথে ।
সন্ধ্যে নামার কাল হলো, আঁধার আসে ধেয়ে,
তোমার ডাগর চোখ দুটি রয়, শুধুই পথ চেয়ে ।
দু গালেতে টোল পরে যেই মুখে হাসি আসে,
তোমার হাসিতে মুগ্ধ সবাই থাকে চেয়ে ।
বিধাতা তোমায় দিলেন ছন্দবাণী আর রূপের ঐশ্বর্য,
আমার জন্য কেন দিলেন শুধুই ধৈর্য্য?
আসা যাওয়ার পথে দেখি, রোজ তুমি থাকো দাঁড়িয়ে,
কার অপেক্ষায় দিন গুনে যাও,আমি যখন ছিলেম দাঁড়িয়ে ।
পাইন পাতার ঝরার সময়, কিংবা ঊষার কাল,
নীলকণ্ঠ খবর দিয়ে যায়, উমা ফিরবেন কাল ।
আমার তবু হৃদয় জুড়ে শুধুই দ্রোহকাল।
বিদ্রোহী মন প্রশ্ন করে, চুপ করে থাকি কেন?
ভালোবাসার কানাগলি অচেনা লাগে যেন ।
অনেক দিনের পরে যখন,দেখা হলো আবার,
সবার চুলে পাক ধরেছে, নেইকো সময় আর ।
বেলাশেষে ডাকলে আমায় চেনা সে নাম ধরে,
অনেক কালের পরে যেন,হৃদয় কথা বলে ।
দূর হতে আজ নমস্কারে বিদায় জানাও মোরে,
ফুলের সাজে ঘুমিয়ে গেছি, সময় গেছে চলে ।
আর জনমে আসবো আবার একই ভাবে আমি,
তখনও কি একই ভাবে, অচেনা থাকবে তুমি?
সময়ের কথা সময় বলে,দাঁড়ায় সে না প্রভু,
আজকে যাদের কথা বাকি, থেকো না নীরব কভু ।
ভালোবাসা সুখের পাখি, দূর আকাশে উড়ান,
পদ্মপাতায় জল হয়ে রয়ে যায়, আমার এই পরান ।
আসা যাওয়ার ছলে শুধুই দিন গুনি,
দিওয়ালিতে দীপ জ্বলেনি, আঁধারে তারা গুনি।
সবাই যখন আমোদ করে,আতশবাজি জ্বালে,
আমার ঘরে অন্ধকারে জোনাকী আলো জ্বালে ।
দারিদ্রই পূজা আমার, হৃদয় হলো নৈবেদ্য,
চোখের জলে গঙ্গা ধরি,কষ্টে লিখি পদ্য ।
দিন কেটে যায়, রাত কেটে যায়, সুখের কথা ভেবে,
অসুখেতেই সুখ যে আমার, এ কথা কে বোঝে?
দিনের শেষে সমাজ জোড়া খ্যাতি রইলো পরে,
পরান কড়ি মেপে রাখি, বিদায় নেবো বলে ।
পাওনা দেনা মিটিয়ে নিলাম আজকে বিদায় কালে,
অন্তিমেতে যাত্রা পথে, সহস্র লোক হাঁটে ।
অমর রাহে ডাক দিয়ে যায়, শেষ যাত্রীরা শোনো,
অমর তবু কেঊ রয়ে না, ইহাই সত্য যেন ।