সংবাদদাতা, কলকাতা:
১১ জানুয়ারী পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেণায় সাহিত্য উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্ভোধন করলেন বাংলার চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি-র উদ্যোগে আকাদেমির দ্বিতীয় ভবন রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবন সংলগ্ন প্রাঙ্গণে (২৭-এ/১, ব্লক- ডি ডি, বিধাননগর, কলকাতা ৭০০০৬৪; সিটি সেন্টার ১-এর কাছে) ১১ জানুয়ারী থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ সাহিত্য উৎসব ও লিটিল ম্যাগাজিন মেলার বড় আয়োজন করেছে রাজ্য সরকার।
লিটিল ম্যাগাজিন মেলা সহ উৎসবের বিভিন্ন দিনে আকাদেমি প্রবর্তিত স্মারক বক্তৃতা সহ আলোচনাসভা, কবিতা ও গল্প পাঠ এবং প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
এই মেলায় আগামী ১৫ জানুয়ারি শেষ দিন ২০১৯ বিকেল চারটের সময় রবীন্দ্র-ওকাকুরা ভবনের নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী মঞ্চে কবিতা পাঠ করার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বহু কবির সঙ্গে কবি ও উদার আকাশ পত্রিকা-প্রকাশনের সম্পাদক ফারুক আহমেদকে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি উদ্যোগে আয়োজিত এই মহা উৎসব ও সাংস্কৃতিক মিলন প্রয়াসের আয়োজনে কবিতা পাঠে কবি ফারুক আহমেদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি-র প্রশাসনিক আধিকারিক।
শুক্রবার রবীন্দ্র ওকাকুরা মঞ্চে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক রামকুমার মুখোপাধ্যায়। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অতিরিক্ত সচিব পিয়ালি সেনগুপ্ত। তিনি স্বাগত ভাষণ দেন। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতি শাঁওলী মিত্র এবং কবি জয় গোস্বামী সহ বহু কবি ও সম্পাদক। সঙ্গীত পরিবেশন করেন অরুণ গঙ্গোপাধ্যায়। সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলায় পুরস্কৃত হলেন ১৫ জন। প্রতি বছরের মতোই এবছরের আয়োজন ছিল চোখে দেখার মতো।
সোমেন চন্দ স্মারক সম্মান পেলেন সৌমিক ঘোষ, তাপসী বসু স্মারক সম্মান পেলেন অসিত পাল, সুধা বসু স্মারক সম্মান পেলেন জয়া মিত্র, বিভা চটোপাধ্যায় স্মারক সম্মান পেলেন রঞ্জিত সিংহ, সুপ্রভা মজুমদার স্মারক সম্মান পেলেন অম্লান দাশগুপ্ত, লীলা রায় স্মারক সম্মান পেলেন জয়া চৌধুরী, মনোজমোহন বসু স্মারক সম্মান পেলেন দেবাশিস দেব৷
আলপনা আচার্য স্মারক সম্মান পেলেন রাহুল পুরকায়স্থ, অনিতা-সুনীলকুমার বসু স্মারক সম্মান পেলেন হিন্দোল ভট্টাচার্য, শান্তি সাহা স্মারক সম্মান পেলেন সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মারক সম্মান পেলেন অর্পিতা কুণ্ডু, লিটল ম্যাগাজিন স্মারক সম্মান পেল ধ্রুপদী এষণা পত্রিকা (সাধারণ সংখ্যার জন্য), লিটল ম্যাগাজিন স্মারক সম্মান পেল অক্ষরেখা পত্রিকা (বিশেষ সংখ্যার জন্য) এবং বাংলা আকাদেমি-মধুপর্ণী স্মারক সম্মান পেল সমতট পত্রিকা।
মেলা উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবন সংলগ্ন প্রাঙ্গণ। যোগ দিয়েছে ২৮৭ টি লিটল ম্যাগাজিন। উৎসবের বিভিন্ন দিন আকাদেমি প্রবর্তিত স্মারক বক্তৃতা, স্মারক সম্মান, প্রদর্শনী, আলোচনাসভা, কবিতা ও গল্পপাঠের আয়োজন করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাংলা গানের নানা অনুষ্ঠানে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে সাহিত্য উৎসব ও লিটল ম্যাগাজিন মেলা।
কবি ও সম্পাদক ফারুক আহমেদ পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বললেন, ২০১১ সালে রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসে ওই বছর বাংলা আকাদেমি আয়োজিত লিটল ম্যাগাজিন মেলাতে গল্প পাঠে ডাক পেয়েছিলাম। তারপর কেটে গেছে কয়েক বছর এবং প্রতিবছর আয়োজিত হয়েছে লিটল ম্যাগাজিন মেলা ও সাহিত্য উৎসব। ২০১৮ সালে কবিতা পাঠে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। এবছর ২০১৯ সালেও কবিতা পাঠে আমন্ত্রণ পেয়েছি, এর জন্য সরকারকে কুর্নিশ এবং কবি জয় গোস্বামী, কবি অভীক মজুমদার সহ সকল সরকারি আধিকারিক ও কর্মকর্তাদের জানাই অশেষ ধন্যবাদ।
মহা এই সাংস্কৃতিক উৎসবে কবিতা পাঠে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি গর্বিত হলাম। কিন্তু গ্রাম বাংলার আরও বিরল প্রতিভাবান কবিদের কবিতা পাঠে সুযোগ দেওয়ার জন্য আগাম আবেদন জানালাম। তিনি আরও বলেন, আমি সরকারি এই উৎসবের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সভামুখ্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা সাহিত্যে বড় কবি জয় গোস্বামী।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি-র উদ্যোগে অকাদেমির দ্বিতীয় ভবন রবীন্দ্রসদন-ওকাকুরা ভবন সংলগ্ন প্রাঙ্গণে ১১-১৫ জানুয়ারি ২০১৯ সাহিত্য উৎসব ও লিটিল ম্যাগাজিনের মেলার শুভ সূচনা বেশ জমে ওঠে।
লিটল ম্যাগাজিন মেলাসহ উৎসবের বিভিন্ন দিনে আকাদেমি প্রবর্তিত স্মারক বক্তৃতা, স্মারক সম্মান, প্রদর্শনী, গান সহ আলোচনাসভা, কবিতা ও গল্প পাঠ এবং প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
সদ্য প্রয়াত কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর স্মরণে থাকছে বিশেষ আয়োজন ও সাংস্কৃতিক স্মরণ অনুষ্ঠান।
“সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের মানুষেরাও কি উদার হতে ভুলে যাচ্ছেন? এবারের কবিতা পাঠে ও পুরস্কার পাওয়ার তালিকায় মুসলিম কবি-সাহিত্যিকের নামই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যাতিক্রম দু’চারজন কবিতা পাঠে ডাক পেলেন। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্য চর্চা করে যাচ্ছেন তাঁরা কি তাহলে যোগ্য নন? এক্ষেত্রেও কি তবে বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে কবির নাম নির্বাচন করা হয়? প্রশ্নটা এবছরও এড়ানো গেল না। পুরস্কার পাওয়ার তালিকায় মুসলিম কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে কারও নামই খুঁজে পাওয়া গেল না। এটা বড়ই বেদনার বিষয়। সংখ্যালঘুদের প্রতি এই চরম বঞ্চনার অবসান আর কবে ঘটবে। উঠছে প্রশ্ন।” বলছিলেন কবি তৈমুর খান।