ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ শক্তি সঞ্চয় করে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় তীব্র হবে
By PIB Kolkata
নয়াদিল্লি, ২৯ এপ্রিল, ২০১৯
দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে ঘনিভূত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ ঘন্টায় ৪ কিলোমিটার বেগে উত্তর উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে। ২৯ এপ্রিল সকাল ৮.৩০-এ এটি শ্রীলঙ্কার ত্রিঙ্কোমালি থেকে ৬২০ কিলোমিটার পূর্বে, তামিলনাড়ুর চেন্নাই থেকে ৮৭০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মাছিলিপত্তনম থেকে ১০৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে ৮.৭ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.৯ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড় আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও শক্তিশালী হবার সম্ভাবনা রয়েছে। পয়লা মে সন্ধ্যেবেলা পর্যন্ত এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। এরপর উত্তর-উত্তরপূর্বে বেঁকে যাবে।
নিম্নের তালিকায় এই ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে কিছু তথ্য-
তারিখ/সময় (ভারতীয় সময়) | অবস্হানঅক্ষাংশ-উত্তর/দ্রাঘিমাংশ পূর্ব | সর্বোচ্চ গতিবেগ (কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়) | ঘূর্ণিঝড়ের প্রকৃতি |
২৯.০৪.১৯ সকাল ৮.৩০ | ৮.৭/৮৬.৯ | ৮০-৯০ থেকে ১০০ | ঘূর্ণিঝড় |
২৯.০৪.১৯ বেলা ১১.৩০ | ৯.৩/ ৮৬.৬ | ৮৫-৯৫ থেকে ১১০ | ঘূর্ণিঝড় |
২৯.০৪.১৯ বিকাল ৫.৩০ | ১০.০/৮৬.৩ | ৯৫-১০৫ থেকে ১২০ | প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
২৯.০৪.১৯রাত ১১.৩০ | ১০.৫/৮৬.০ | ১১০-১২০ থেকে ১৩৫ | প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
৩০.০৪.১৯ভোর ৫.৩০ | ১১.০/৮৫.৬ | ১২০-১৩০ থেকে ১৪৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
৩০.০৪.১৯বিকাল ৫.৩০ | ১১.৯/৮৪.৮ | ১৩০-১৪০ থেকে ১৫৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০১.০৫.১৯ভোর ৫.৩০ | ১২.৫/৮৪.০ | ১৫০-১৬০ থেকে ১৭৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০১.০৫.১৯বিকাল ৫.৩০ | ১৩.১/৮৩.৭ | ১৬০-১৭০ থেকে ১৮৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০২.০৫.১৯ভোর ৫.৩০ | ১৩.৭/৮৩.৮ | ১৭০-১৮০ থেকে ১৯৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০২.০৫.১৯বিকাল ৫.৩০ | ১৪.৫/৮৪.০ | ১৭০-১৮০ থেকে ১৯৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০৩.০৫.১৯ভোর ৫.৩০ | ১৫.৫/৮৪.৩ | ১৬৫-১৭৫ থেকে ১৯০ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০৩.০৫.১৯বিকাল ৫.৩০ | ১৬.৫/৮৪.৭ | ১৬০-১৭০ থেকে ১৮৫ | অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
০৪.০৫.১৯ভোর ৫.৩০ | ১৭.৫/৮৫.১ | ১৫৫-১৬৫ থেকে ১৮০ | প্রবল ঘূর্ণিঝড় |
সতর্কবার্তা
১)প্রবল বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তা।
২৯ এবং ৩০ এপ্রিল কেরালার বিক্ষিপ্ত জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বর্ষনের সম্ভাবনা আছে। ২৯ এবং ৩০ এপ্রিল তামিলনাড়ুর উত্তর উপকূল এবং অন্ধ্রপ্রদেশের দক্ষিণ উপকূলে কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে।
দোসরা মে অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর উপকূল এবং ওড়িশার দক্ষিণ উপকূলে কয়েকটি জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তেসরা মে ওড়িশা উপকূল এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তর উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তেসরা মে পশ্চিমবঙ্গে উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি এবং কিছু জায়গায় ভারি বর্ষন হতে পারে।
২)ঝোড়ো হাওয়ার সতর্কবার্তা
বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণপূর্বে এবং সংলগ্ন এলাকায় ঘন্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ৩০ এপ্রিল সকালে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ ঝড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি পাবে ১২০-১৩০ থেকে ঘন্টায় ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। পয়লা মে সন্ধ্যেবেলা বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম ও পশ্চিম মধ্যাংশ এবং সংলগ্ন উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরী, দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ঘন্টায় ১৬০-১৭০ কিলোমিটার থেকে ১৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
আজ ২৯ এপ্রিল তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরী উপকূল, কোমরিন অঞ্চল এবং মান্নার উপসাগরে ঘ্ন্টায় ৩০-৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে প্রবল ঝড় বয়ে যেতে পারে। ৩০ এপ্রিল সকালবেলায় এই ঝড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ঘন্টায় ৪০-৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ৩০ তারিখ সন্ধ্যেবেলা এই ঝড় ৫০-৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরী এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
দোসরা মে থেকে উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশা উপকূলে ঘন্টায় ৪০-৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে। ঐ একই জায়গায় তেসরা মে এই ঝড়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ৫০-৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় হতে পারে।
৩) সমুদ্রের পরিস্হিতি
বঙ্গোপসাগরে দক্ষিণ-পূর্ব এবং সংলগ্ন অঞ্চলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। ৩০ এপ্রিল সকাল থেকে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম এবং পশ্চিম-মধ্য সংলগ্ন এলাকায়, উত্তর তামিলনাড়ু, পুদুচেরী ও দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে এই পরিস্হিতি দেখা দেবে। পয়লা থেকে তেসরা মে-য়ের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের পশ্চম মধ্যাংশ থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল পর্যন্ত এই অবস্হা বজায় থাকবে।
পয়লা মে পর্যন্ত পুদুচেরী, তামিলনাডু এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে এবং প্রবল জলোচ্ছাসের সম্ভবনা আছে। পয়সা থেকে তেসরা মে অন্ধ্রপ্রদেশ উত্তর উপকূল এবং দোসরা মে থেকে ওড়িশা উপকূলে এই পরিস্হিতি দেখা দেবে।
৪)মৎসজীবিদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা-
আজ ২৯ এপ্রিল দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগর সংলগ্ন এলাকা, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং শ্রীলঙ্কা উপকূলে মৎসজীবিদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে। পয়লা মে পর্যন্ত এই অঞ্চলগুলি ছাড়া পুদুচেরী, তামিলনাড়ু এবং দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে এই সতর্কবার্তা বজায় থাকবে। পয়লা থেকে তেসরা মে বঙ্গোপসাগরের পশ্চিম-মধ্য অঞ্চলে এবং অন্ধ্রপ্রদেশের উত্তরে সতর্কবার্তাটি কার্যকর থাকবে। দোসরা মে থেকে উত্তর-পশ্চিম এবং সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং ওড়িশা উপকূলে এই সতর্কবার্তা অব্যাহত থাকবে।
যেসমস্ত মৎসজীবি গভীর সমুদ্রে রয়েছেন তাঁদের উপকূলে ফিরে আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।