মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্যসরকার উদ্যোগ নিতে এ-তো দেরি হচ্ছে কেন উঠছে প্রশ্ন
নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুর:
মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্যসরকার উদ্যোগ নিয়েছে তার জন্য অফুরন্ত ধন্যবাদ জানাই।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় “মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়” গড়ার জন্য বিল পাশ হয়েছে সেই উপলক্ষে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত করে গত বছর ৩১.০৭.২০১৮ রবিবার বহরমপুরে এক অনুষ্ঠন করে ধন্যবাদ দেওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল।
এই বিলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মুর্শিদাবাদ জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হয়েছে।
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানানোর উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সমিতি (ওয়েবকুপা) গত বছর রবিবার ৩০.০৯.২০১৮ “মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা উদযাপন” কর্মসূচি পালন করেছিল।
ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপক্ষে ওয়েবকুপা মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করা হয়পছিল।
বিগত ৯ নভেম্বর ২০১৫ এ বিষয়ে ওয়েবকুপার পরিচালনায় বহরমপুর রবীন্দ্র সদনে সফল নাগরিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও পথসভা সংগঠিত হয়েছিল।
বিগত ১৭.১২.২০১৫ ওয়েবকুপার জেলা যুগ্ম সম্পাদক ড. মধু মিত্র, ড. ইন্দ্রদীপ ঘোষ এবং উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ একটি ডিপিআর মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর নিকট পেশ করেন। ঐ ডিপিআরটি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ে একটি গবেষণামূলক প্রস্তাব হিসেবে এযাবৎ কালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ডিপিআর টিকে মুর্শিদাবাদ জেলাতে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা ও বিল তৈরিতে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। এছাড়াও গত ২০১৫ সাল থেকে ওয়েবকুপা মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটি একাধিকবার মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে গণ স্বাক্ষরসহ লিখিত দাবিপত্র পেশ করেছে। যাইহোক, বিধানসভায় “মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় বিল” পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হয়েছে।
এই বিল পাশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণাকে মর্যাদা দেওয়ার কারণেই ওয়েবকুপা গত বছর ৩০.০৯.২০১৮ তারিখের উদযাপন কর্মসূচি নিয়েছিল। বহরমপুরের গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইনিস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে এই বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুব্রত সাহা, বিশিষ্ট লেখক ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক তথা মু্র্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনকারী ফারুক আহমেদ, মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান মহ. সোহরাব, বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতিবিদ ড. শক্তিনাথ ঝা, জেলার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী লেখক, সাংবাদিক ও অধ্যাপক এবং শিক্ষকেরা।
অনুষ্ঠানের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মধু মিত্র জানিয়েছিলেন, এই অনুষ্ঠানে মুর্শিদাবাদ জেলার চার শতাধিক অধ্যাপক-শিক্ষিক-লেখক- বুদ্ধিজীবী ও অন্যান্য সমাজের বিশিষ্টজনেরা অংশগ্রহণ করেছিল।
অধ্যাপক ড. মধু মিত্র ও ফারুক আহমেদ জানালেন, অচিরেই মুর্শিদাবাদ জেলাতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে একটি উন্নত মানের পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠতে চলেছে। এজন্য তিনি জেলাবাসীর পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান।
এসআইও ইসলামি ছাত্র সংগঠনও মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য আন্দোলন করেছিল তাই তাদেরকে অফুরন্ত ধন্যবাদ জানালেন ফারুক আহমেদ। এই এসআইও ইসলামি ছাত্র সংগঠন মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য বিধানসভাতে গিয়ে উচ্চ শিক্ষামন্ত্রীকে তাঁরা একটা স্মারকলিপিও তুলে দিয়েছিল।
সকলেই অবগত আছেন উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বিগত ২০০৭ সাল থেকেই জোরদার লেখালিখি করেছেন এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার জন্য।
এছাড়াও মুর্শিদাবাদ জেলার বহু মানুষ ও সংগঠন আন্দোলন করেছিল শিক্ষা প্রসারে মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য। বহু দিন পর বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য বিল পাশ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
তবে আজও কাজ শুরু হয়নি। মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে দ্রুত কাজ শুরু করুক রাজ্যসরকার। এই দাবীও তোলা হয় বর্ধিত সভা থেকে।
বিশবাঁও জলে মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তেলার কাজ।
মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে রাজ্যসরকার উদ্যোগ নিতে এ-তো দেরি হচ্ছে কেন উঠছে প্রশ্ন। ফারুক আহমেদ জানালেন, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপাচার্য নিয়োগ করতে এবং কোথায় মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে তা আজও ঠিক করতে পারল না রাজ্য সরকার এখন দেখার কত নির্বাচন পার হলে তবেই মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন ও কাজ শুরু হবে। দিন দিন মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠন পাঠন শুরু হবে বাস্তবিকই এখন মনে হচ্ছে মমতা সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে দ্রুত মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার।