মাননীয় সরকার বাহাদুর NRC ছাড়াই দয়া করে আমাকে উদ্বাস্তু করে দিন
হে মহান দেশের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার আপনাদের যোগ্যতা ও উপযোগিতা অসাধারণ এবং প্রকৃত মানবতার পথিকৃৎ । আপনাদের উচ্চ শিক্ষিত ও মেধাবী মন্ত্রীদের দূরদর্শিতা আকাশচুম্বী । ঈশ্বর আপনাদের সকল উদ্যোগ কে সফল করুন । তা ভাইপো কে ছেলের মতো ভালোবাসা ই হোক বা পূর্বতন রাষ্ট্রপতির পরিবারের লোক কে নাগরিকতা থেকে বাদ দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ কল্যাণ কামনায় ব্রতী হোয়াই হোক বা ৭০ বছর ধরে নিজের বাপের মাল মনে করে দেশের টাকা বিদেশের ব্যাংকে রাখার মতো অতি বড় দেশপ্রেমিকের মতো ২জি ,কয়লা জি , ইত্যাদি কর্ম কাণ্ডের নিপুন নেতৃত্ব হোক , সকল বিষয়ে রাজনৈতিক নেতারা এক এক জন নিশ্চিত শান্তির জন্য নোবেল প্রাইজ পাবেন । তবে সে শান্তি শ্মশানের কিনা তা আগামী দিন বলবে ।
স্ট্যাটিসটিক্স দিয়ে জিডিপি বাড়ানো যায় কিন্তু মানুষের পেটের ভাত কি হেডলাইন নিউজে ভরবে। সিবিআই কাকে ধরলো কে জামিন পেলো আর কার নাম এনআরসি লিস্টে থাকবে এনিয়ে ভাবতে ভাবতে নিজেকে বড় অসহায় লাগছে । সাপলুডো খেলছি মনে হচ্ছে একবার মই দিয়ে উঠছি পরের মুহূর্তে সাপের ছোবলে একেবারে নিচে । ভারী মজা নিজে কে নিজেই বলি মোগাম্বো খুশ হুয়া ।
ধর্ম দেখে তাড়াবেন? তবে বলি আমি রামকৃষ্ণের যতমত ততপথ মানি, তাহলে স্যার আমার ধর্ম তো সর্ব ধর্ম আমার কি হবে ? বেছে বেছে তাড়াবেন না গণ দরে ? হয় পদ্ম নয় ঘাসফুল কিন্তু স্যার ফুলে এলার্জি থাকলে, আমার জাম কাঁঠাল ভালো লাগলে কি বাদ যাবো ?
সারা পৃথিবী টা বর্ডার আর আইনের জমজমাট এক খিচুড়ি যার মধ্যে একদল আবার শান্তির জন্য অস্ত্র নিয়ে ধর্মের জন্য লড়ছে ,জান্নাত না কি যেন পাবে । পৃথিবীটাকে নরক বানিয়ে পরকালের জান্নাত কি ভাবে পাবে সে স্বয়ং খোদা ও ভাবছেন ।
এক হতভাগার করুন গল্প শুনুন ভুল করে ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে বাড়ি করল ১২ লাখের লোন ১৫ লক্ষ দেয়ার পর ব্যাঙ্ক বললো, তাঁর নাকি ১৬ লক্ষ বাকি আর পারল না দিতে ।মানব দরদী আইসিআইসি ব্যাঙ্ক বাড়িও নিলো সাথে দিলো উদ্বাস্তু করে । এনআরসি দরকার নেই এমনি উদ্বাস্তু কারণ আধার কার্ড ,ভোটেরকার্ড ,পান কার্ড বা পাসপোর্ট সব যে ঠিকানায় তা আর তাঁর নয় । বেচারা জানেই না চন্দ্রা কোচার ব্যাংকের প্রধান থাকার সময় যা ঝেড়েছেন তা NPA র নাম করে সাধারণ মানুষের মাথার ছাদ কেড়ে নিচ্ছে বালান্সশিট ঠিক করার জন্য ।
আজব দেশ প্রধান মন্ত্রী নাকি সকলের জন্য বাড়ি দিচ্ছেন । আর দিদি ও দাদা রা তাই দিয়ে নিজের বহুতল বানাচ্ছেন । দিদি কে বলে দাদাদের ধোলাই একেবারে দেশি চোলাই মনে করে খেয়ে নিন, শান্তি পাবেন ।
মা মমতা বা “মোটা ভাই ” মোদী বা রাহুল বাবা অর্ধ জীবন আপনাদের যত্নে ভারত আমার সকল দেশের রানি হয়েছে । বামপন্থীদের চিন্তা কিউবা বা বোলিভিয়া নিয়ে , দেশের কথা পরে আসবে গ্লোবাল প্লেয়ার তো !
আমাকে দয়া করে নো ম্যান্স ল্যান্ডে পাঠিয়ে দিন যেখানে কিছু পাখি আর খোলা আকাশ ছাড়া কারো বাস নেই । মুখোশ পড়া ভোট লোভী শয়তানদের হাতের পুতুল হওয়ার থেকে ভূমিহীন জায়গার ভূমিপুত্র হওয়া সে অনেক ভালো ।
শুধু একটাই আপসোস বারবার ভাবি এবার হয় তো নেতাজি সুভাষ বা বিধান রায় হবে, বা, মা মাতঙ্গিনী হাজরা এলেন ,ভুল আমার নয় আপনাদের মুখোশটা যারা বানায় সেই খবরের কাগজ আর টিভি কোম্পানির প্রশংসা প্রাপ্য । আদ্যোপ্রান্ত জালি মাল কে আসল গিনি সোনা বানানোর জন্য তাবেদার মিডিয়া একনম্বর ।
মুখোশের চোখেও জল আসে শুনেছি বিসর্জনের দিন মা দুর্গার মূর্তির চোখেও জল দেখা যায় । আমি দেখিনি কিন্তু অনুভব করেছি তার ভক্তদের চোখের জলে ।
বেশি না, একটি বার মানুষের বাচ্চা হয়ে মানুষের জন্য কাজ করে দেখুন আর না হলে এনআরসি কে নিয়ে অহেতুক অর্ধ মৃত মানুষ গুলোকে নিয়ে ভোটের রাজনীতি খেলবেন না ।
যে দেশে সামান্য পাসপোর্ট করতে গিয়ে পুলিশের হাজার বাহানা সামলে পুজোর অগ্রিম বোনাস দিতে হয় পকেট থেকে; সে দেশে এনআরসি এক সোনার খনি হয়ে উঠবে অসৎ আধিকারিক আর সুযোগ সন্ধানী কিছু রাজনৈতিক দালালদের জন্য ।
সত্যি যদি এনআরসি করা হয় তবে সবার আগে তাড়ান করাপ্টেড নেতা আর আধিকারিকদের । চ্যারিটি বিগিন্স এট হোম| রাজনৈতিক দল গুলো এনআরসি করুক নিজের অন্দরে । আছে কি সেই হিম্মৎ ?
তাই আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাকে নোম্যান্স ল্যান্ডে পাঠান অন্য দেশে নয় কারণ সেখানেও আপনাদের জাত ভাই কোনো অন্য রঙের শকুন বসে আছে আরেক বাহানায় আমাদের রক্ত খাবার জন্য ।
আজাদ হিন্দ ফৌজের জন্য নেতাজির সাথে লড়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন ঠাকুর্দা, আজ বেঁচে থাকলে নিশ্চয় আবার অস্ত্র তুলে নিতেন দেশ কে বাঁচাবার জন্য ।
এনআরসির আমি পূর্ণ সমর্থক তবে মানুষ তাড়াবার জন্য নয় দেশের বৈধ নাগরিকদের পঞ্জী থাকা দরকার আর সন্ত্রাসবাদী বা অসামাজিক লোকদের দূর করাও জরুরী ।
দেশহিতের জন্য কাজ আর নিজের হিতের জন্য কাজ তফাৎ করাটাই যে কঠিন । আগে মুখোশের চোখে জল আসতো এখন তো মানুষের চোখের জলটাও মেকী ।
তাই একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি ।