ভারত ও বিশ্বের মঞ্চে বাঙালির দাদাগিরি – কিন্তু এরপর মশাল কে নিয়ে যাবে ?
১৪ অক্টোবর ২০১৯ বাঙালির বিশ্ব জয়ের এক মাইল ফলক দিন একই দিনে দাদা বৌদি জোড়া নোবেল পেলেন ইকোনমিকসে অভিজিৎ ব্যানার্জী ও তাঁর সুযোগ্যা স্ত্রী Esther Duflo । ছিদ্রান্নেষী বলবেন বৌদি বিদেশিনী তাতে কি ? দাদার স্ত্রী মাতৃসমা বৌদি আর আমারদের ঘরের বৌ কেন তাঁর সাফল্যে আমরা খুশী হবো না ?অবশ্যই আমাদের গর্বের বিষয় । অমর্ত্যের সূত্র যতই নাপসন্দ হোক আজ মহামান্য প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত্য বলতে বাধ্য হলেন জিতে রহ বাঙ্গালী ।
আর দেশের কথা যদি ওঠে গত রাতেই ক্রিকেটের ময়দান ছেড়ে দাদাগিরি এবার বোর্ডের অন্তরে । দেশ যখন বেটিং কেলেঙ্কারি নিয়ে জেরবার সৌরভ ত্রাতা হয়ে গড়লেন টীম ইন্ডিয়া , যে দল ভয় পায়না উল্টে চোখে চোখ রেখে লড়াই করে আর লর্ডসের গ্যালারী থেকে উড়িয়ে দেয় জার্সি ঔদ্ধত্বে নয় আত্মবিশ্বাসে ।
দুটো ঘটনা আল্লাহ্দে আটখানা বাঙালী এবং হওয়ারই কথা । কিন্তু প্রশ্ন একটাই দুজনের মধ্যে ছোট জনের জন্মই যে প্রায় অর্দ্ধ শাতাব্দী ছুঁতে চললো । আগামী দিনের সৌরাভ বা অভিজিৎ দা কি তৈরী হবে আর এ বাংলায় । সামগ্রিক আর্থসামাজিক ও পারিবারিক পরিবেশ কি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠার দৌড়ের বাইরে গিয়ে আগামীর অভিজিৎ বা সৌরভ হওয়ার উৎসাহ দেবে তাঁর শিশুকে ।
“পঁচিশে নৌকরি ছাব্বিশে ছোকরী তিশ মে বাচ্চা ষাট পে রিটায়ার” এই ফর্মূলা গত পঞ্চাশ বছরে ক্রমশ বাঙালিকে ১০-৫টার বাইরে বেরোতে আর সাহস দেয় না ।
দামাল ছেলেরা এখন সিন্ডিকেটের নেতা তারা আর ক্ষুদিরাম বা প্রফুল্ল চাকী বা নেতাজী হয় কে গর্বের মনে করেনা বরং ১০০০ স্কোয়ার ফুট ফ্ল্যাট একটা গাড়ী অনেক বেশি সম্মান এনে দেবে পাড়ায় । সপ্তাহের শেষে আইনক্স বা পিভিআর সাথে চিনে খাবার তাকে করে তুলবে মোস্ট ওয়ান্টেড ইন ফ্যামিলি সার্কলে একটু জনি যদি সাথে ওয়াক করে প্রতি সন্ধ্যায় তবে তো কথাই নেই । কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে মাঝারী মানের ম্যানেজার আর বছরে একবার দুবার সাইবার কুলি হয়ে বিদেশে যাত্রা । পাশের বাড়ির কাকা কাকিমাকে গর্ব করে মা বলবেন ছেলে আমার আমেরিকা গেছে অনেক কাজের চাপ । সারাদিনে ব্যর্থ মার্কিন উচ্চারণে সাপোর্ট টিকিট ক্লোজ করা । অর্থ মানুষ কে সামাজিক প্রতিষ্ঠা দেয় কিন্তু কালো জয়ী করতে পারেনা ।
তাই আজ অভিজিৎ বা সৌরভ আমাদের পোস্টার বয় আর সেটাই আরো বেশি করে ভয়ের কারণ দ্বিতীয় কোনো অভিজিৎ বা সৌরভ আসার পথ বন্ধ করে মাঠ হয়ে যাচ্ছে ফ্ল্যাট আর স্কুল গুলোতে যারা শিক্ষকের আসনে বসছেন তাদের অধিকাংশের ন্যূনতম যোগ্যতা শিক্ষকের না রাজনৈতিক কর্মীর তা তারাই ভালো জানেন ।
আমি আজ খুব খুশি বাঙালি ও ভারতীয় হিসাবে কিন্তু নিজের দীর্ঘ ২৫ বছরের দেশ বিদেশের অভিজ্ঞতা বলে ক্রমশ আমরা বাঙালি একাই একশো কিন্তু বাঙালি সমাজ “বং” হয়ে সর্দার দের রিপ্লেস করে দিচ্ছে তার এভারেজ যোগ্যতায় ।
তাই শেষে বলি আমার নতুন প্রজন্মের ভাই ও বোনেরা নিজের নিজের যোগ্যতায় প্ররিশ্রম করে এগিয়ে চলো বাবা মা শিক্ষকের কথায় নয় কি ভালো লাগে আর কি ভালো পারি এই দুই কে নিয়ে সর্বোচ্চ ক্ষেত্রে এগিয়ে যাও । সৌরভ বা অভিজিৎ দা কে টিভি তে দেখে খুশি হবে কিন্তু ছবির পেছনের মানুষটার পরিশ্রম কে ছাপিয়ে যেতে না পারলে কিছু করা কিন্তু মুশকিল ।
তাই আজ বাঙালির আনন্দের দিন আর চিন্তার এর পর কে ?
মা বাবাদের কাছে অনুরোধ ওদের ওদের মতো বড় হতে দিন শুধু দেখুন শর্টকাট নয় চেষ্টায় যেন কেনো ফাঁকি না থাকে ।