কে জানে ক ঘন্টা পাবে এই জীবনটা

0
1069
'My horoscope said I was going to make someone happy today.'
'My horoscope said I was going to make someone happy today.'
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:5 Minute, 58 Second

কে জানে ক ঘন্টা পাবে এই জীবনটা

कर्मण्येवाधिकारस्ते मा फलेषु कदाचन । मा कर्मफलहेतुर्भुर्मा ते संगोऽस्त्वकर्मणि ॥

ড: পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা ,৩১.০৭.২০২০

ভাগ্যধর রায় বাংলার কোনো এক মফস্বল শহরের মধ্য তিরিশের একজন মানুষ।পড়াশোনা জানা।সুঠাম স্বাস্থ্য।রোগ বালাই নেই।তার দু হাতে দশ আঙুলে চোদ্দটা পাথর।মন্ত্রপুত মাদুলি। দুই হাতের বাজুতে স্বপ্নে পাওয়া শিকড়বাকড় লাল মোটা সুতো দিয়ে বাঁধা।ভাগ্যধরের হাঁটা চলা কথা বলা শুনলেই বোঝা যায় তার শরীর মন ও মাথায় কোথাও মেদ নেই।কিন্তু রোজকার খাওয়া পরার ব্যবস্থা করতেই এখন তার পিছন দিয়ে লাল সুতো নীল সুতো বেরিয়ে যায়।বাবার আমলে তৈরি বাড়ির ছাদ দিয়ে বর্ষার সময় জল পড়ে।সদর দরজার নিচের ভাঙা অংশ দিয়ে দিনে কুকুর বিড়াল রাতে সাপ ঢুকে যায়।মাঝে মাঝে বউ কমার্শিয়াল ব্রেক নিয়ে কয়েকদিনের জন্য পালিয়ে যায় বাড়ি থেকে।

এমনিতে প্রথম থেকে মানুষটা এমন ছিলো তা নয়।পরিজন বন্ধুরা স্বাভাবিক নিয়মেই কেউ তার থেকে বেশি,কেউ কম সচ্ছল। বাংলায় স্নাতকোত্তর এবং বি.এড.কমপ্লিট করার পর মন্দার বাজারে তার চাকরি জোটেনি। কিন্তু ছাত্র পড়িয়ে তার বেশ চলে যাচ্ছিলো। অথচ একটা সময়ের পর থেকে কিরকম যেন সব তালগোল পাকিয়ে গেল।

ভাগ্যাধরের মনে হলো যোগ্যতা ও শিক্ষার তুলনায় বন্ধুমহলে ও সমাজে তার স্বীকৃতি কম।এর ফলে, যত বয়স বাড়তে থাকলো, একটু একটু করে সে হতাশ হতে থাকলো।

আরো বেশি শ্রম,শ্রমে আরো বেশি যুক্তি প্রয়োগ ছেড়ে দিয়ে, পরস্থিতির সঙ্গে কার্যকারণ সম্পর্ককে না মিলিয়ে তার বুকের পাথর হাতের আঙুলে, অন্ধ বিশ্বাস ও কুসংস্কারের শিকড়বাকড়, মাদুলি গলা ও হাতে উঠে পঁয়ষট্টি কেজি ওজনকে সত্তর কেজি করে দিলো অনায়াসে।যত পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকলো,মন্দির যাওয়া ও মানত করার হিড়িক তত বাড়তে থাকলো তার।

ভাগ্যধর রায় কিন্তু বাঙালি সমাজে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা চরিত্র নয়।গড়পড়তা বাঙালির কর্মসংস্কৃতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন রক্তবীজের মতো এরকম হাজার হাজার ভাগ্যধরের আনাগোনা।বাঙালি কর্মবাদী থেকে অদৃষ্টবাদী, ভাগ্যবাদী হয়ে কিছুটা নিজের অজ্ঞাতসারে কিছুটা জ্ঞাতসারে প্ৰতি মুহূর্তে তার আর্থিক,মানসিক,বৌদ্ধিক ও যৌক্তিক সচ্ছলতা কমিয়ে ফেলছে।নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারছে।

প্রাণীকুলের মধ্যে মানুষই যে সবথেকে বুদ্ধিমান,যুক্তিবাদী এবং সৃষ্টিশীল এরকম দাবি করা হয় এবং সংগত কারণেই করা হয়।বুদ্ধি যুক্তির উপস্থিতিতে শ্রম কম লাগে।ফলত মানুষ অন্যন্য প্রাণীদের মতো অত পরিশ্রমী নয়।মৌলিক অধিকারের অর্জন গুলো বুদ্ধির সঙ্গে শ্রমের মিশেলে তারা করে।

গড়পড়তা বাঙালিদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা হচ্ছে ও বাড়ছে অন্য কারণে।জাগতিক নিয়মে কাজে সাধারণ মনযোগ এবং সাধারণ বুদ্ধিবৃত্তি থাকলেই মানুষ নিজের স্থিতিতে থিতু হতে পারে।গরীব ভিক্ষাজীবী থেকে শুরু করে আর্থিক ভাবে সবথেকে শক্তিশালী মানুষ সবার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম নীতি প্রযোজ্য।কিন্তু নিজের অবস্থায় বা অবস্থানে সন্তুষ্ট না হয়ে বা অন্যের সচ্ছলতর,সহজতর অবস্থানে ঈর্ষান্বিত হয়ে,তার যে যোগ্যতা নেই তারও বেশি পেতে গড়পড়তা বাঙালি অসাধু ভাগ্য ব্যবসায়ী ও অদৃষ্ট ব্যবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে।তার যুক্তি, বুদ্ধি ও বিবেচনা লোপ পেয়ে সে এক শ্রমবিমুখ জড়ভরতে পরিণত হয় শেষ পর্যন্ত।

পাঁচটি ইন্দ্রিয়ে ও মস্তিষ্কে মেদ জমা অলস ও হতাশ কুম্ভকর্ণের মতো দিন কাটে তার।

অদৃষ্ট বা ভাগ্য যুক্তি বা বিজ্ঞানের থেকে কোনদিনই বেশি শক্তিশালী নয়।ছিলো না।হবেও না।তবুও বিজ্ঞান ও যুক্তির তরফে বার বার সভ্যতার সংকট ও ক্ষতি হয়েছে উচ্চাশী মানুষের দ্বারা তাদের অপপ্রয়োগে।কাকতলীয় ও পরিসংখ্যানগত কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি হলো এই,যে, গড়পড়তা বাঙালির শরীরে ও মনে এখন ভাগ্যবাদ ও অদৃষ্টবাদের সর্বনাশা মারণ রোগের উপসর্গ প্রবলতর নয়, প্রবলতম।
●●●●●●●●●●●●●●

#পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়

৩১.০৭.২০২০

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here