শরীরের নাম মহাশয় যা সেবা সওয়াবে তাই সয় – সাবধান এ প্রবাদ কিন্তু রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিন্তু নয়
ড:পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়,কলকাতা,১৪ অগাস্ট ২০২০:
ওষুধ,পথ্য, লাইফ স্টাইল এই তিন মিলে চিকিৎসার সাফল্য।আচ্ছা আচ্ছা শিক্ষিত সচেতন দেশিয় মানুষ বিশেষ করে এ রাজ্যের মানুষ ভাবেন ওষুধ তো খাচ্ছি! তাহলে আর কষ্ট করে বিধি নিষেধ মানা কেন? এ ভাবনা,বলা বাহুল্য, ভুল ও আত্মঘাতী।ওষুধের কাজ হলো মানুষ যে সমস্যাটি যে কারণে বাঁধিয়েছে সে সমস্যাটি এবং সমস্যার কারণটির চিকিৎসা করা।কিন্তু তাকে শরীরে ঢুকতে বাধা দেওয়া ও প্রতিরোধ করা মানুষের সচেতনতা এবং দায়িত্ব।ওটি ডাক্তার ও ওষুধের কম্ম নয়।সুতরাং রোগ না উপশম হলে দোষারোপ সব থেকে আগে নিজেকে করতে হবে।ডাক্তারকে শুধুমাত্র নয়।দায়িত্ব পালন নাগরিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। কিছু উদাহরণ দিচ্ছি।
সর্দিজ্বর,নিউমোনিয়া ইত্যাদি হলে ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় বেরোনো,ধুলো ধোঁয়া খাওয়া বন্ধ করতে হবে।ঠান্ডা জলে স্নান করা, আইসক্রিম,কোল্ড ড্রিঙ্কস খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
পেট খারাপ হলে ওষুধ, ও.আর.এস খেতে হবে, সঙ্গে হাল্কা, সহজপাচ্য খাবার।বিরিয়ানি ফাস্ট ফুড ইত্যাদি নয়।ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার বন্ধ করতে হবে।ওজন কমাতে হবে।দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে।
হাই প্রেসারে প্রেসার কমানোর ওষুধ খেতে হবে।সঙ্গে নুন খাওয়া বন্ধ করতে হবে।ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। স্থূলত্বে নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে,সঙ্গে স্নেহ জাতীয় খাবার বন্ধ করতে হবে।
কিডনিতে সমস্যা থাকলে চিকিৎসক যতটুকু মেপে দেবেন তত টুকুই জল খেতে হবে ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে।
গ্যাস্ট্রিক আলসারে ওষুধের খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে,দীর্ঘক্ষন খালি পেটে থাকা যাবে না।সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে।দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন কাটাতে হবে।ঠিক মতো ঘুমাতে হবে।
অসুস্থ বাচ্চা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত স্কুলে পাঠানো যাবে না।জন্মগত হৃদ যন্ত্রের রোগে ভারী এক্সারসাইজ এবং আউটডোর গেমস নিষেধ।
হিমোফিলিয়াতে চোট লাগানো এবং থ্যালাসিমিয়াতে আয়রন জাতীয় ওষুধ খাওয়া নিষেধ।
মানসিক রোগে ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অত্যন্ত উত্তেজনাকর পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে।মৃগী রোগীর ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে একা একা রাস্তায় বেরোনো এবং পুকুর বা নদীতে স্নান করা নিষেধ।
ম্যালেরিয়া অথবা ডেঙ্গুতে ওষুধ খেলেই গোটা জীবনের জন্য রোগ দুটি থেকে মুক্তি এমন নয়।মশার কামড় খাওয়া এবং মশার চাষ করা বন্ধ করতে হবে।মশারি টাঙাতে হবে।
রোগ সারানো নাগরিকের,সমাজকর্মীর,প্রশাসনের এবং ডাক্তার বাবুর যৌথ প্রয়াস।সবাইকে মনে রাখতে হবে।দায়িত্ব বস্তুটি কারো একার দায় নয়।সবাইকে ভাগ করে নিতে হয়।নইলে দশের লাঠি একের বোঝা হয়।
●●●●●●●●●●●●
পলাশ_বন্দ্যোপাধ্যায়
১৪.০৮.২০২০