দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-কে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন বারাসাত
এম রাজশেখর (৯ মার্চ ‘২২):- পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ না হওয়া পর্যন্ত আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ও দায়রা আদালত ভবনে অবস্থিত দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-এর আদালত কক্ষ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল ‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’ বারাসাত কর্তৃপক্ষ।
‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’ বারাসাত-এর তরফ থেকে মহাসচিব তারক মুখার্জি জানান, “এই মুহুর্তে বারাসাতে আইনজীবীদের দুটো বার রয়েছে, এই দুটো বারই পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত একযোগে দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-এর আদালত কক্ষ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।”
‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’ বারাসাত-এর তরফ থেকে যখন দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-এর আদালত কক্ষ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, ঠিক তখন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা আদালত ভবন কর্তৃপক্ষ এই প্রসঙ্গে মৌনতার পথে হেঁটেছে।
দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-এর আদালত কক্ষ বহিষ্কারের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখনো পর্যন্ত আধিকারিক স্তরে কোনো মতামত প্রকাশ করা হয়নি।
জেলা আদালত ভবন কর্তৃপক্ষ মুখ না খুললেও, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু আদালত কর্মী জানিয়েছেন, “এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারকের ভরা এজলাসে ক্ষোভে ফেটে পরেছিলেন আইনজীবীগণ, তার পরেই আইনজীবীদের তরফে আদালত কক্ষ বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত।”
আদালত কর্মীদের বক্তব্যকে আংশিক সমর্থন করে ‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’ বারাসাত-এর সহাধ্যক্ষ অলোক সমাজপতি জানিয়েছেন, “আজকের কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি।
দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারকের আসনে আসীন ব্যক্তি ভরা আদালতে আমাদের সদস্য ও সদস্যাদের সাথে অপমানজনক ব্যবহার করে আসছিলেন। আজকের ঘটনা আমাদের সদস্য ও সদস্যাদের সমস্ত রকম ধৈর্য্য শেষ করে দেয়। তার পরেই দুই বার একযোগে এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিচারক রূপে প্রশিক্ষণ পর্বের শেষে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সদরে সেকেণ্ড জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রূপে প্রথম নিয়োগ পেয়েছেন অনন্যা দাশগুপ্ত।
প্রশাসনিক তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, “চাকরি জীবনের প্রথম দিকে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ও অনাকাঙিক্ষত এই ঘটনা তাঁর জীবনের এক কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে গেল। এই ঘটনা ভবিষ্যত জীবনে তাঁর উন্নতির ক্ষেত্রে অন্তরায়ও হয়ে উঠতে পারে।”
করোনা অতিমারীর পরে কিছুদিন হলো হালকাচালে শুরু হয়েছে আদালতের কর্মকাণ্ড। জমে আছে শয়ে শয়ে মামলা।
এই সময় ‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’, বারাসাত-এর নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দ্বিতীয় বিচারবিভাগীয় বিচারক-এর আদালতে চলা মামলার বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষই।
এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ‘ডিস্ট্রিক্ট বার এসোসিয়েশন’, বারাসাত-এর তরফে জানানো হয়েছে, “ভরা আদালত কক্ষে মোয়াক্কেলদের সামনে দিনের পর দিন যেভাবে আইনজীবী ভাই বোনেদের অপমান করেছেন এই ম্যাডাম আগে তো সেই অপরাধের বিচার হোক, তারপর না হয় উনি অন্য বিচার করবেন।”