রং দেখে ঢং করি না, আমার পতাকা তিন রঙের নয়, পাঁচ রঙের গেরুয়া, সাদা, নীল, সবুজ আর আমার দেশের সেনা ও স্বাধীনতার শহীদের লাল রক্তের।

0
1088
Follow Netaji Photo by Suman Munshi
Follow Netaji Photo by Suman Munshi
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:11 Minute, 29 Second

রং দেখে ঢং করি না, আমার পতাকা তিন রঙের নয়, পাঁচ রঙের গেরুয়া, সাদা নীল, সবুজ আর আমার দেশের সেনা ও স্বাধীনতার শহীদের লাল রক্তের।

সুমন মুন্সী

এ স্বাধীনতা এদের অর্জিত নয়, এ স্বাধীনতার উৎসব শহীদের কি অপমান নয় ? জাতীয় পতাকা তোলে চোর, ধর্ষক আর দেশদ্রোহী নেতা নেত্রী? কোর্টে প্রমান করা গেলে, তবেই সে দোষী আর নাহলে, সাত খুন মাফ?

যুগ যুগ ধরে ভারত বিশ্ব গুরু। মহাযোগী তাপসদের দেশ। রাসবিহারী বোস, নেতাজী সুভাষ , ভগৎ সিং আসফাকুল্লাহ খানেদের বলিদানের দেশ। আর তাঁদের বলিদানের স্বাধীনতার পতাকা তোলে, দেশদ্রোহী ও তস্করদের নেতা নেত্রীরা । এবং জারজ রাজনৈতিক উত্তরাধিকার দেশের বর্তমান জনসংখ্যা কে করেছে নপুংসক ।

ঘাড়ে গর্দানে কুকুরের শিকলের মতো মোটা সোনার চেন পরা নেতা এসে, মাইকে জ্ঞান দিচ্ছে সৎ ও সততার সাথে সমাজ গোড়ার। প্রতি পাড়ায় একটি করে উপপত্নী বা স্ত্রীকে নেতার খিদমতে দিয়ে, কিছু টেন্ডার হাতে নিয়ে অট্টালিকা গড়ে নেয়া এই সমাজ, এই দেশের উন্নয়ন স্বাধীনতা প্রেমীদের দান নয়, বরং নির্বাক নীরব থাকা ভদ্রলোকেদের উদাসীনতার ফসল ।

জারজ রাজনীতির এই ফসল আজ বিষবৃক্ষের মতো তার শাখা বিস্তার করেছে। চুরি এখন স্ট্যাটাস সিম্বল, উপপত্নী আর পরকীয়া সামাজিক উদারতার নিদর্শন । এ দেহ আমার আর তাকে যেমন খুশি ভোগ করা, আমার অধিকার। মায়ের হাতের ডাল ভাত নয়, পিজা বার্গার আর চওমিন হলো স্বপ্নের খাদ্য।

সৎ নেতারা দল গড়তে পারেন না ? প্রশ্ন করেছিলাম, আপাত ভদ্রলোক, এক লড়াকু যুব নেতাকে। তিনি খেদের সাথে বললেন, “দাদা সৎ মানুষ একা হয়ে যায়, দল করলেই যে দুর্নীতিবাজ হতে হবে, না হলে ব্যানার কেনার টাকাও কেউ দেবে না “।

“একটা ১০ফুট x ৬ ফুট ব্যানার করতে ১০টাকা স্কোয়ার ফুট দরে, ৬০০০ টাকা লাগে। ১ কিমি রাস্তায় 5০ ফুট অন্তর, ব্যানার দিলে, ৬ লক্ষ লাগে সাথে ঘাড়ে গরদানেদের পুষতে ডেলি পার হেড ৫০০। ১০০ ছেলে সাথে নিতে হলে, ডেলি ৫০০০০ লাগে, ৪টা গাড়ি ড্রাইভার নিয়ে ডেলি ১২-১৫ হাজার। কোন সততায় আপনার এই টাকা আসবে। এগুলো না থাকলে, এদের আপনি দাদা বা দিদি বলে ডাকবেন?”

উত্তর কি দেব, চিন্তায় পরে গেলাম, খবরের কাগজে আলতায় স্লোগান লেখা হতো “শিক্ষা আনে চেতনা, চেতনা আনে বিপ্লব”। পলিটিকাল ইন্ডাস্ট্রি এই শ্লোগান ১০০% সঠিক নিয়েছে, রাজনৌতিক শিক্ষার রং যাই হোক, লক্ষ্য এখন চুরি আর লুটে খাওয়ার চেতনা। আপসোস এই সমাজের জন্য নেতাজী আইসিএস ছাড়লেন আর তাঁর সাথে ঠাকুর্দা তাঁর সর্বস্য ।

নিজে কে প্রশ্ন করুন, আজ খাদি পরে চিত্তরঞ্জন দাস বা লালা লাজপত রায় এলে, পাত্তা পাবেন কি, আপনার কাছে ? নাকি ১০ স্কোরপিও চেপে ১০০ ছেলের নেতা আজকের নেতাজী আপনাদের কাছে?

উত্তর দেব কি? দ্বন্দে পরে গেলাম, সত্যি তো ঠাকুর্দার সেই স্বাধীনতার যুদ্ধে, নেতাজির সাথে মান্দালয়ের জেলে যাওয়া, আজাদহিন্দের সেই লড়াই; সবই এখন বোকার লড়াই মনে হচ্ছে । তবু তাঁদেরকেই কেন আদর্শ মনে হয়? কেন কেউ বার খেয়ে ক্ষুধিরাম বললে রাগ হয়, সেই ব্যক্তির ওপর ?

ছোট বেলায় ঠাকুমা দেবীচৌধুরাণীর গল্প বলতেন। প্রশ্ন করতাম, “দিদা ডাকাত হলেও তাঁকে সবাই ভালোবাসো কেন “? উত্তর দিতেন, দেশের জন্য, মানুষের জন্য যাঁরা লড়েন, তাঁরা স্বাধীনতা সংগ্রামী, ডাকাত নয় । আর নিজের জন্য যারা লড়েন, চুরি করে, দেশ তাদের বলে তস্কর।মানুষের পাশে মানুষ নাও দাঁড়াতে পারে, কিন্তু তস্করের পাশে, তস্কর থাকবেই, এক সাথে খাবেই। ওরা বেইমানির কাজও, ঈমান্দারীর সাথে করে। তাই ডাকাতের দল লুটের বাখরা পায়, আর সৎ মানুষ ট্যাক্সের চাপে মারা পরে।”

এ লেখা এক পুরোনো স্মৃতিচারণ, বর্তমান রাজনীতির সাথে যোগ থাকলে, বাস্তবে আপনি বুদ্ধিমান সঠিক চিনেছেন। জারজ রাজনীতির দালালদের রং না দেখে, জুতো মারুন। ৭৬ তম স্বাধীনতার উপহার, অন্তত একঘা করে জুতো মারুন চোরের নেতা নেত্রীদের । দেশদ্রোহীর, কোনো নারী পুরুষ ভাগ আলাদা হয়না, কোন জাত ধর্ম নেই এই দেশদ্রোহীদের ।

চোর নেতা নেত্রী পরে মারবেন, আগে নিজের ছেলে, মেয়ে ,ভাই, বোনের দিয়ে চোর পেদানো শুরু হোক, প্রথম অপরাধের দিন থেকেই । দেখবেন নেতা পালানোর পথ পাবে না। ১৪০ কোটির দেশে দেশমাতৃকার চরণে ১০০ কোটির বলি দিলেও, দেশ থাকবে। যদি বাকি গুলো মানুষ হয়, দেশ আবার মানুষ নতুন ভাবে গড়ে নেবে।

এই পর্যন্ত্য স্বপ্নটা বেশ চলছিল, হটাৎ ঘুম ভেঙে গেলো, পাশের খাটে বসে দেখি, এক নেতা বন্ধু বলছে, “আজ স্বাধীনতা দিবস, চল মাল খেয়ে সেলিব্রেট করি, দেশের জিডিপি বাড়বে”। পাশের ঘর থেকে অন্য রঙের বন্ধুদের আওয়াজ এলো, “আমরা কি বাদ যাবো নাকি”।
সরকারি দলের বন্ধু বললো, “মাল আমার, চাঁট তোদের দায়িত্ব। শুধু এই নেতাজি ভক্তকে আটকে রাখ, না হলে জ্ঞান দিয়ে সব মাটি করে দেবে”।
সরকারি বিরোধী দুই বন্ধু অনেক কষ্টের সাথে বুকে পাথর রেখে একবাটি মুড়ি আর জল দিয়ে ঘরেই আটকে দিলো আমাকে ।

সেই থেকে সারাদিন ঘরেই বন্ধ আছি। স্বাধীন ভাবে চিন্তা করছি, সারাদিন ধরে। আচ্ছা চিন্তাও কি মাসিক ভাতায় বন্ধক রাখা যায়, দেখুন না কোনো নতুন রং এই বন্ধকী কারবার শুরু করে কিনা? বন্ধ দরজার ওপার থেকে চিত্কার করে বললাম, ” অন্তত জাতীয় পতাকার বান্ডিলের ওপর মদের গেলাস রাখিস না, ভাই, দেশের এইটুকু সম্মান আজকে প্রাপ্য “।

সরকার বিরোধী সমস্বরে আওয়াজ উঠলো,”শালা স্বাধীনতার বিবেক, নেতাজীর তিন নাম্বার বাচ্চা। মেরে শুইয়ে দে শালা কে। ছুটির দিনে ফুর্তি করতেও দেয় না। এমন কেস দেব আর কথাই বেরোবে না শালা।”

সেই থেকে আমি জেগে, আমার বিবেক শুয়ে, যেমন আমার আরো দেশবাসী ভাই ও বোনেরা নিশ্চিন্তে আছেন।

আজাদী কে অমৃত পিয়ো ওর জোরসে বোলো, “বার খেয়ে ক্ষুধিরাম হয়েও না”। মাপ করবেন, হে বীর ক্ষুদিরাম এই দেশ আপনার ত্যাগ কে এই নামেই এখন ডাকে, লজ্জাও করে না। প্রিয় নেতাজি কে “তেজোর কুকুর বলেছিলো এই দেশেরই লোক”। তবু দেশের জন্য চিৎকার করি, ক্ষমতায় বেশ্যার দালাল বা বিদেশের পা চাটা কুকুর কে বসিয়েও স্বপ্ন দেখি, সোনার দেশ গোড়ার।

লক্ষ কোটি শহীদের রক্তের ঋণ, এক পেগ বিদেশী স্কচের সোনালী সঙ্গের নেশায় শোধ করি। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় বিকৃত জাতীয় পতাকার ছবি দিয়ে, শিল্পের দোহাই দিয়ে, আমার শৈল্পিক স্বাধীনতা কে রক্ষা করি। কিংবা বিদেশী ইজমের জারজ সন্তান হয়ে, আজাদী ঝুটা হায় ডাক ছাড়ি ।

এতক্ষন যারা এই পর্যন্ত্য পড়লেন, এবার পাশ ফিরে শুয়ে পড়ুন, কাল আবার নতুন বস্তায় উন্নয়ন আসবে কোনো খালি ফ্ল্যাটে। তবতক, চোরদের আজাদীর জন্য মিছিল করি আসুন। ওদের দেয়া ভিক্ষার উচ্ছিষ্টের প্রসাদে, দেশের গণতন্ত্রকে মজবুত করি । আর সন্ধ্যের আলোচনায় তীব্র বাদানুবাদের তুফান দেখি, শুধু গুলিয়ে যায় গত মাসে যে বিরোধী আজ সে সরকারি দলে , গলার চেন আরো মোটা হলো যে ।

এপর ও যদি রক্তে এড্রিনালিন না আসে, বেকার চিন্তা না করে, একটা গান চালিয়ে দিন ,
“আয়ে মেরে বাতেন কে চোর ও ,
যারা আপনি জেব মে করলো দেশ …”

জয় হিন্দ আজাদী মুবারক ।

পুনশ্চ :

ভারতের সকল বীর শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ স্বাধীনতা সংগ্রামী ও সৎ নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চাই, আমার নিষ্ক্রিয় নীরবতাও এই বৌদ্ধিক ত্বাত্তিক জড় মানসিকতার জন্মদাতা, যা দেশ কে নীরবে লুন্ঠিত হতে দেখেও নীরব থাকতে উৎসাহ দেয়, নিরাপত্তার সামান্য আশায়।

কলম বিক্রী নেই, তাই আপনাদের চোর বলতে লজ্জা নেই। রং দেখে ঢং করি না, আমার পতাকা তিন রঙের নয়, পাঁচ রঙের গেরুয়া, সাদা, নীল, সবুজ আর আমার দেশের সিপাহী ও স্বাধীনতার শহীদের লাল রক্তের।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here