জীবনের দ্বিতীয় শৈশবে মানুষের বন্ধু মানবিক সমাজসেবক সংস্থা “বাঁচবো”
সুমন মুন্সী,কলকাতা
ড: ধীরেশ চৌধুরী জেরিয়াটিকে এক্সপার্ট বয়সজনিত জটিলতা কে চিকিৎসক হিসাবে সেবা করে ভগবান বুদ্ধের সেবা বলে মনে করেন। প্রশ্ন করেছিলাম ধীরেশ বাবু আপনারা কি শুধুই সমাজের ওপরের স্তরেই বয়সজনিত এই পরিষেবা দিয়ে থাকেন না কি সমাজের সকল স্তরে এই সেবা নিয়ে কাজ করেন ?
ড:ধীরেশ চৌধুরী হেসে বললেন :
“আমরা শুধুমাত্রই স্বচ্ছল প্রবীণদের পাশেই আছি তা নয়, যে সমস্ত প্রবীণ মানুষেরা আর্থিকভাবে দুঃস্থ, অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে পারেন না, সমাজ বা পরিবারের কাছে অনেক ক্ষেত্রেই ব্রাত্য তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছে ”বাঁচবো” প্রায় তার জন্ম লগ্ন থেকেই।
করোনা র সময় কলকাতা ও সুন্দরবনে বহু প্রবীণ মানুষকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে বাঁচবো র পক্ষ থেকে, পাশে ছিলেন অনেক মানুষ।
গত বছর ২০২১ সালে ২৩শে জানুয়ারি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু র ১২৫ তম জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে তার নামাঙ্কিত “নেতাজী জেরিয়াট্রিক আউট পেশেন্ট ইউনিট” চালু করা হয় সুন্দরবনের পাথরপ্রতিমা ব্লকে আমাদের বিকশিত স্কুলে র নিজস্ব ভবনে। কলকাতা থেকে আগত প্রবীণদের চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের বিনামূল্যে পরামর্শ ছাড়াও বিনামূল্যে ওষুধ এবং ইসিজি করার সুযোগ পাচ্ছেন অঞ্চলের প্রবীণ মানুষেরা। প্রতিমাসে একবার এই স্বাস্থ্য শিবির হবার লক্ষ্য নিয়ে শুরু হলেও করোনা র পরিস্থিতির কারণে আমরা নিয়মিত করে উঠতে পারিনি। এই উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আমাদের পাশে থেকেছেন আ্যক্লারিস উইলিস টাওয়ার্স ওয়াটসন কোম্পানি। তাছাড়া প্রোটেক্ট দ্যা ওয়ারিয়র্স এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন চিকিৎসক যোগ দান করেছেন বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
খুশির কথা পরিস্থিতি অনেকটা স্থিতিশীল হওয়ার কারণে গত মাস থেকে আবার নিয়মিত এই শিবির শুরু করা গেছে। গত মার্চ মাসে এসেছিলেন ডাঃ উজ্জ্বল মুখার্জী। বহু প্রবীণ মানুষ এসেছিলেন দেখাতে।
গত ১০ ও ১১ই এপ্রিল তারিখে এবারের শিবিরে উপস্থিত ছিলেন ডাঃ ধীরেশ কুমার চৌধুরী ও ডাঃ সম্পূর্ণা রায়। ষাটেরও বেশি প্রবীণ মানুষ এসেছিলেন চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। সকলকেই প্রায় পুরো একমাসের কোর্স দিতে আমরা সক্ষম হয়েছি আমরা। ফ্রি ইসিজি ও করা হয়েছে। আমরা কৃতজ্ঞ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছে যারা আমাদের ওষুধ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এছাড়াও আমাদের স্কুলের প্রায় চল্লিশ জনেরও বেশি শিশুকেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা থেকে অল বেঙ্গল উইমেন্স কনফারেন্স এর কলকাতা শাখার সভানেত্রী সহ বিভিন্ন শাখার পাঁচ প্রতিনিধি এসেছিলেন। মাস্ক, স্যানিটাইজর ও কিছু ওষুধ সহ ওনারা শিশুদের জন্য বিস্কুটের প্যাকেট ও ফ্রুট জুস এর প্যাকেট নিয়ে এসেছিলেন। বাঁচবো র বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে এ আই ডব্লিউ সি বহুদিন ধরেই পাশে রয়েছেন।
আপনাদের সকলের সহযোগিতায় ‘বাঁচবো’ পাশে দাঁড়াতে পারছে শিশু থেকে প্রবীণ সকলের পাশে। আগামীদিনেও একইভাবে আপনাদের পাশে চায় বাঁচবো…”
মানবিক এই পরিষেবা নিয়ে আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যান ধীরেশদা আপনি কখন মানুষের কাছে ডাক্তার বাবু থেকে ঘরের মানুষ হয়ে গেছেন সে কথা বুঝি এই অসহায় মানুষ গুলিও জানেন না। মানবতার এই অভিযানে সমাজ ঋদ্ধ হচ্ছে প্রতিদিন ।
আশা রাখি সকলেই বাঁচবো, “বাঁচবো” থাকবেন পাশে।