লকডাউনের কবিতা – না নিজের কাছে নিজেকে জানার তাগিদ
“সারা পৃথিবী অন্ধকারে , আলো ফুটছে রাশিয়ার আকাশে ,
না কি সেও এক সিঁদুরে সর্বনাশের প্রতীক্ষা ।
জীবন হারিয়ে যাচ্ছে জীবিকার গহ্বরে ,
এই ছিল মোর অভিযোগ, আজ সেও যেন মরীচিকা সম।
হাতড়ে বেড়াই দুমুঠো খুদার অন্ন, মোর ক্ষুধার লাগি । ~সুমন মুন্সী “
বাঙালি চিরকাল একই একশো , কিন্তু একশো বাঙালি এক হতে পারেনা , এ আমাদের বিরুদ্ধে চিরকালীন অভিযোগ । কিন্তু “লকডাউনের কবিতা” সেই অসাধ্য সাধন করেছে । “এক ঝাঁক পাখিদের মতো কিছু রোদ্দুর” আলো ছড়িয়ে দিলো ভোরের আকাশে ।
মারণ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব, মানুষ দেশ কালের বেড়া ভেঙে অস্তিত্ব এর প্রায় সংকট কাল পূর্ণ করতে চলেছে । আর ঠিক তখন আলো জ্বললো সমস্ত শিল্পীমহলের এক সূত্রের প্রয়াসে , পাশে আছি পাশে থাকবো একসাথে নিলেন অঙ্গীকার বাংলার উজ্জ্বল নক্ষত্ররা ।
আমার ভাতৃসম অভিজিৎ পাল সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন ,তার লেখা ও ভাবনায় সাজানো ‘লক ডাউনের কবিতা’ এই সৃষ্টিতে । কে যুক্ত নেই অভিজিৎ এর ‘লক ডাউনের কবিতার’ সঙ্গে , যুক্ত হয়েছেন সিধু (ক্যাকটাস), পটা, গৌরব চ্যাটার্জী গাবু, পন্ডিত মল্লার ঘোষ, নবারুণ বোস, কৌশিক রাহুল, পুষ্পেন্দু চ্যাটার্জী, দীপ সেন, প্রাঞ্জল দাস, মহুল চক্রবর্তী, শাওন সেন,দীপায়ন রিকি ঘোষ, গৌরব সরকার, অভিষেক ঘোষ, দীপ্ত দাস ও অর্ক সরকার.গুরুজিৎ সিং,চন্দন চক্রবর্তী,গৌতম দে, আনি আহমেদ, সোমা দাস, ইমন সেন সহ-প্রায় তিরিশ জন শিল্পী একসঙ্গে এই কবিতা পাঠ করেছেন।
সকলেই বাড়িতে থেকেই অংশগ্রহণ করেছেন এই কবিতা পাঠে। গত ৩০ জুলাই AS অডিয়ো লেবেলের ইউ টিউব চ্যানেল থেকে রিলিজ করা হয়েছে। কবিতাটির ভিডিয়ো এডিট ও ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিয়েছে স্বর্ণাভ দাস।
কথা দিয়েছিলাম কিছু লিখব বিষয় তা নিয়ে । দুটো কথা বলি ,কবি কবিতা অনেক হলো ,গান গাওয়া শেষ হলো, ধন্যবাদ ও হাততালি অনেক হলো , বেলা শেষে যাওয়ার আগে বলি রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন আমাদের মন্দির , কিন্তু খালি পেটে ভজন হয় না । সে দরদী নেই যে গান শোনার জন্য বা শেখার জন্য চীন থেকে নালন্দা হাঁটে রাজি । আকবর ও নেই যে তানসেন কে নিশ্চিন্তে মিয়া কে তোরী বানাতে দেবে ।
শিল্পীদের সময় এসেছে অধিকার ছিনিয়ে নেবার বেহালার করুন সুর নয় ধামসা মাদলের সাথে বেস গিটার ও উগ্র ড্রাম চাই যাতে নবান্ন থেকে লালকেল্লা কেঁপে ওঠে । দয়ার দেন নয় চাই শিল্পীর অধিকার । কান্না ভেজা চোখে দয়া নয় , রক্ত চক্ষু আর শীতল দৃষ্টিতে বাহ্যিয়ে দিন , আমরা আর সং নই।
শিল্প আর সংগীত বেঁচে থাকে ইতিহাসের ধ্বংস স্তুপের ভিতরেও , শাসকের হয়তো মাথাও কেউ চিনবে বা হাজার বছর পরে ,কনিষ্ক কি মুন্ডু হীন এমনি ইতিহাসের বইতে ?
দাড়িওয়ালা বুড়োকেই সাহসের সাথে ধরে বলি “আজি হতে শত বর্ষ পরে,কে বসে পড়িছ মোর কবিতা খানি” , শত বর্ষ কিনা জানি না ,তবে লকডাউনের সময়ের মানুষ মনে রাখবে একে “পোয়েটিক ডকুমেন্টারী অফ টাইম হিসাবে”।
Listen and see the Gem:
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1324675234393157&id=864858660374819