এই দিওয়ালিতে, পুজার মূল ভাবের সঙ্গে থাকো বললেন গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর

0
713
Sri Sri Ravishankar - Lions ISAAME Forum 2017 Kolkata by Suman Munshi
Sri Sri Ravishankar - Lions ISAAME Forum 2017 Kolkata by Suman Munshi
0 0
Azadi Ka Amrit Mahoutsav

InterServer Web Hosting and VPS
Read Time:7 Minute, 9 Second

এই দিওয়ালিতে, পুজার মূল ভাবের সঙ্গে থাকো বললেন গুরুদেব শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর

দিওয়ালি বা দীপাবলী আলোর উৎসব, আনন্দের উৎসব, সমৃদ্ধি, জ্ঞান, প্রজ্ঞা এবং আরও অনেক কিছুর উৎসব। তার জন্যে একটি আলো জ্বালানই যথেষ্ট নয়। আমাদের জ্ঞানকে বিকশিত করবার জন্য এবং অন্ধকার কে বিদূরিত করবার জন‍্য, অনেক আলো জ্বালাতে হবে। বাইরের আলো একটি প্রতীক যা তোমাকে ব‍্যক্ত করে। কিন্তু তোমাকে নিজের প্রাণবন্ততা, আনন্দ ও জীবনীশক্তি দ্বারা জ্বলে উঠতে হবে, এবং সেটাই হবে আসল উৎসব। এবং সেটা একমাত্র জ্ঞানের বিকাশ দ্বারা সম্ভব, শুধুমাত্র স্বাচ্ছন্দ্য, যন্ত্রাদি, অর্থ বা বন্ধু বান্ধব দ্বারা সম্ভব নয়।

আসল আনন্দ জ্ঞান থেকেই আসতে পারে।

আমরা এইদিন মা লক্ষ্মীকে পুজো করি। আগের বছর আমাদের রক্ষা ও আশীর্বাদ করবার জন্য তাঁকে ধন‍্যবাদ জানাই। পুনরায় আমরা যাতে দেবত্বর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারি তার জন্য প্রার্থনা করি। যে দেবত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কোনো অভাব থাকে না।

দেবত্ব সর্বত্র সুপ্ত ভাবে আছে, পূজার মাধ্যমে তাকে জাগ্রত করতে হয়। পন্ডিতগণ খুব প্রাচীন একটি স্তোত্র পাঠ করেন, যেটি মানুষের প্রথম প্রার্থনা মন্ত্রগুলির একটি, ঋকবেদ থেকে নেওয়া শ্রী সূক্তম্। তার আগে

ভগবান গনেশকে আহ্বান জানানো হয় সকল বিঘ্ন দূর করবার জন্য। এরপর কলস  পূজা করা হয় এক পাত্র জল সমেত, যেখানে সকল দেবতা ও দেবীকে আহ্বান জানিয়ে পূজার্চনা করা হয় এই গ্রহের সকলেকে আশীর্বাদ করবার জন্য, যাতে সকলে একটি শুদ্ধ মন, শুদ্ধ হৃদয়, শুদ্ধ বুদ্ধি এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারে। কারণ সকলের হৃদয়ের পূর্ণতার মধ্য দিয়ে যা জন্মলাভ করে, তাই পূজা।

শ্রদ্ধা ঐশ্বরিক ভালোবাসার প্রতীক এবং পূজা হচ্ছে ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা জানাবার কলা।পূজার পদ্ধতি হচ্ছে প্রকৃতি তোমাদের জন্য যা করেন তার অনুকরণ করা। প্রকৃতি তোমাদের কত ভাবে তুষ্ট করেন, পূজাতে তোমরা সেই সবকিছু তাঁকে ফেরত দাও। 

পূজাতে ফুলের অর্ঘ্য দেওয়া হয়। ফুল ভালোবাসার প্রতীক। ঈশ্বর কতরূপে তোমাদের ভালোবাসা দিতে এসেছেন: মা, বাবা, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান, বন্ধু। সেই একই ভালোবাসা গুরুর মধ্য দিয়ে আসে তোমাদের ঐশ্বরিক ভালোবাসায় উত্তীর্ণ করবার জন‍্য, যা আসলে তোমাদের নিজস্ব  স্বভাব। আমরা সকলের থেকে যে ভালোবাসা পাই তা স্মরণ করে পুষ্প দিয়ে পূজা করি। তোমরা ফল অর্পণ করো তার কারণ ঈশ্বর বিভিন্ন ঋতুতে তোমাদের নানা রকম ফল প্রদান করেন। প্রকৃতি তোমাদের খাদ্য জোগান তাই পূজাতে তোমরা শষ‍্য সমর্পণ কর। প্রদীপ বা মোমবাতি এবং স্নিগ্ধ কর্পূরের আলো জ্বালানো হয়, ঠিক যে ভাবে সূর্য এবং চন্দ্র  প্রকৃতিকে আলোকিত করে আমাদের প্রদক্ষিণ করেন। ধূপ জ্বালানো হয় সুগন্ধের জন্য। আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয় পূজায় ব‍্যবহৃত হয় এবং গভীর আবেগের সঙ্গে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজার মাধ্যমে ভগবানকে আমরা বলি, “তুমি আমাদের যা দিয়েছ, তাই আবার তোমাকে ফিরিয়ে দিচ্ছি”। পূজা অর্থ শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানানো। 

যজ্ঞ এবং আচার অনুষ্ঠানেরও অনেক সুফল। যজ্ঞ করলে যশ, প্রজ্ঞা, বিদ‍্যা, বুদ্ধি, বল, বীর্য, আয়ুষ, ঐশ্বর্য ইত্যাদি লাভ করা যায়।

প্রতিটি মানুষের মধ্যে তিন ধরনের শক্তি কাজ করে।

১)  ইচ্ছা-শক্তি  ( কিছু করবার ইচ্ছে)

২)  ক্রিয়া-শক্তি ( কিছু করবার শক্তি)

৩)  জ্ঞান-শক্তি  ( জ্ঞান) 

সেই রকম মহাকালী শক্তির প্রতীক, মহা লক্ষ্মী জাগতিক সম্পদের প্রতীক এবং মহা সরস্বতী জ্ঞানের প্রতীক। এইগুলি জীবনের বিভিন্ন দিক যা সূক্ষ্ম অনুভূতির দ্বারা পরিচালিত হয়, এবং সূক্ষ্ম জগতের সঙ্গে যোগাযোগের জন‍্য পূজা একটি মাধ্যম। আমরা যে জগতকে দেখতে পাই তা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। কারণ আরও কত কি যে আছে! আমরা কি ভাবে তা জানতে পারি? গভীর ধ‍্যানে মগ্ন হয়ে আমাদের মন্ত্র শুনতে হবে, যা আমাদের দেশে মন্ত্রস্নান বলে কথিত, যা পাশ্চাত্য দেশেও শব্দস্নান বলে লোকপ্রিয় হয়েছে। এই সকল প্রাচীন মন্ত্রের স্পন্দন আমাদের সকল সত্ত্বাকে আলোড়িত করে সবল ও উদ‍্যমী করে তোলে।

যদিও সব সময় পূজাতে কি হচ্ছে আমরা ঠিক বুঝতে পারিনা, আমরা যদি চোখ বন্ধ বা খুলে রেখে যা হচ্ছে তাতে নিমগ্ন হয়ে যেতে পারি, তাকেই শ্রদ্ধা বলে। যার মানে অজানাকে ভালোবাসা। আমরা জানি কিছু একটা আছে কিন্তু সেটা ঠিক কি তা জানি না। একবার সেই অজানাকে ভালোবেসে ফেললে তাকে জানতে পারা যায়। তখন তোমরা উপলব্ধি কর, “আরে এটাতো একটা শক্তি”, তখন এটাও বুঝতে পার যে দেবী মাতা শুধু একটা ধারণা মাত্র নয় যা কারুর মন থেকে এসেছে, তিনি সত্যিই আছেন।

দুটি জিনিস করতে হবে। অজানাকে ভালোবাসা আর তার দ্বারা তাকে জানতে পারা। এবং তখন তুমি উপলব্ধি করবে যে তা তোমারি অঙ্গ, আলাদা বা দূরে নয়।সেটাই বেদ বেদান্তে বলা হয়েছে, ঈশ্বরকে জানা ও তার মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়া।

About Post Author

Editor Desk

Antara Tripathy M.Sc., B.Ed. by qualification and bring 15 years of media reporting experience.. Coverred many illustarted events like, G20, ICC,MCCI,British High Commission, Bangladesh etc. She took over from the founder Editor of IBG NEWS Suman Munshi (15/Mar/2012- 09/Aug/2018 and October 2020 to 13 June 2023).
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
Advertisements

USD





LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here