Read Time:4 Minute, 4 Second
শহরের পথে নিজেদের রান্না করা পোলাও, বিরিয়ানি, চাইনিজ খাবার ফেরি করবে বন্দিরা
“দো আঁখে বার হাত” গুরু দত্ত আর ভ সন্তারামের অমর ছবি মনে আছে | এক ডজন কয়দি নিয়ে জেলার ফসল ফলিয়ে তাদের মানুষ করার চেষ্টা করেছিল আজ রাজ্য সরকার ঠিক সেই পথের সন্ধানে চলেছে|
কয়েদিরাই এবার রাস্তায় নেমে নিজেদের হাতে তৈরী রান্না খাবার বিক্রি করবে। চলতি মাসেই এর জন্য দমদম সংশোধনাগারে রান্নার বিশেষ প্রশিক্ষণও শুরু হচ্ছে। কারামন্ত্রী বলেন, মৎস্য দপ্তরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই কাজ করা হচ্ছে। কয়েদিরা নিজেদের সাজা সম্পূর্ণ করে সমাজে গিয়ে যাতে সমাজের মূল স্রোতে ফেরে, সেই লক্ষ্যেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
কারা দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দমদম সংশোধনাগারে একটি বড় ক্যান্টিন আছে। সেখানে প্রতিদিন প্রায় তিন-সাড়ে তিন হাজার জনের রান্না হয়। কয়েদিরাই সেই রান্না করে থাকে। এখন ভাত-ডাল-তরকারি ছেড়ে, তাদের দিয়ে বিভিন্ন পদের রান্না করানো হবে। আর সেই খাবারই রাস্তায় নেমে প্রতিদিন বিক্রী করবে দুই আসামি।
রাজ্য মত্স্য উন্নয়ন নিগম থেকে জানানো হয়েছে, দমদম সংশোধনাগারের ক্যান্টিনে আসামিদের কন্টিনেন্টাল থেকে পোলাও, বিরিয়ানি, চাউমিন, মোগলাই সব রান্নাই শেখানো হবে। আপাতত ২৪ জনকে এই রান্না শেখানো হবে। প্রথমে সাজাপ্রাপ্ত অনেককে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার পরে তাদের মধ্যে থেকে যারা ভালো রান্না করতে পারবে, তাদের বাছাই করাহবে। তারাই রাস্তায় নেমে খাবার দেশি-বিদেশি খাবার বিক্রি করবে।
নিগমের অধিকর্তা বলেন, তাঁদের রেস্তোরাঁয় প্রতিদিন খাবারের প্রচুর চাহিদা থাকে। কিন্তু, সেই তুলনায় পর্যাপ্ত রাঁধুনি নেই। তাই দমদমের কয়েদিদের দিয়ে তাদেরই ক্যান্টিনে রান্না করানো হবে। সেই খাবার নিগমের রেস্তোরাঁয় বিক্রি করা হবে। যে খাবার অবশিষ্ট থাকবে, তা আবার রাস্তায় ঘুরে বিক্রি করবে সেই কয়েদিরা। এর জন্য নিগমের পক্ষ থেকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই গাড়িতেই ঘুরেঘুরে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় আসামিরা ওই খাবার বিক্রী করবে।
কারা দপ্তরের এক অধিকর্তা জানান, প্রতিদিন দু’জন করে আসামি রাস্তায় বেরিয়ে এই খাবার বিক্রি করবে। আপাতত ঠিক হয়েছে, এয়ারপোর্ট ১নং থেকে নাগেরবাজার, লেকটাউন, দমদম পার্ক, বাগুইআটি থেকে দমদম স্টেশন, সিঁথি, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত এলাকায় ঘুরেঘুরে তারা এই খাবার বিক্রী করবে। এর জন্য ডেইলি পে-রোলে দু’জনকে প্রতিদিন সংশোধনাগার থেকে ছাড়া হবে। নিরাপত্তার জন্য তিনজন করে পুলিসকর্মী থাকবেন।
এপ্রিল থেকেই এই প্রকল্প শুরু করতে চাইছে দুই দপ্তরই।
Advertisements